Wednesday, November 30, 2022

পেঁয়াজ চাষ

সুখসাগর জাতের পেঁয়াজ চাষ পদ্ধতি

পেঁয়াজ চাষ পদ্ধতি


জাতের বৈশিষ্ট্যঃ-


এটি উচ্চ ফলনশীল উফশী জাতের পেঁয়াজ।পেঁয়াজের আকার চ্যাপ্টা, গোলাকার, বোঁটা চিকন,লালচে বর্ণের এবং অধিক ঝাঁঝযুক্ত। প্রতিটি পরিপক্ক পেঁয়াজ এর গড় ওজন ১৩০-১৫০ গ্রাম।


জীবনকালঃ-


১৩৫-১৪০ দিন।


বপন‌‌ সময়ঃ-


 ২৫ শে আশ্বিন হতে ২০ শে অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত।


মাটির ধরনঃ-


যে মাটিতে পানি জমে না এমন জমির মাটি অর্থাৎ দোঁআশ,বেলে দোঁআশ,এঁটেল দোঁআশ,পলি যুক্ত মাটি এই পেঁয়াজ চাষর জন্য উপযুক্ত মাটি।


জমি তৈরিঃ-


সুখসাগর জাতের পেঁয়াজ চাষ এর জন্য জমি প্রথমে ২ বার চাষ দেওয়ার পর ৩-৪ দিন মাটি শুকিয়ে গেলে ১ বিঘা (৩৩শতকে) ২০০০ (দুই হাজার) কেজি গোবর জাতীয় জৈব সার প্রয়োগ করে তারপর আবার ২ বার জমি চাষ দিতে হবে।এরপর ২-৩ দিন পর মাটি শুকিয়ে গেলে ট্রাক্টর অথবা পাওয়ার টিলার দ্বারা জমির উপরের মাটি ঝুরঝুরে করে চাষ দিয়ে মই দিয়ে মাটি সমান করতে হবে।মাটি ঝুরঝুরে করে চাষ দেওয়াকেই পেঁয়াজ চাষ এর ক্ষেত্রে শেষ চাষ বলা হয়।

মনে রাখতে হবে যে,শেষ চাষ দেওয়ার আগে জমিতে বিঘা প্রতি (৩৩ শতকে)---

টি এসপি ৪০ কেজি,

এম ও পি ২০ কেজি,

জিপসাম ৪০ কেজি,

বোরন ২ কেজি,

ইকোফুরান অথবা কার্বোফুরান জাতীয় দানাদার কীটনাশক ২ কেজি সবগুলো রাসায়নিক সারের সাথে একত্রে মিশিয়ে জমিতে ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।সার প্রয়োগ ও শেষ চাষ দেওয়ার ১ দিন পর জমিতে সেচ প্রয়োগ এর সুবিদার্থে কয়েকটি কেয়ারি তৈরি করার পর প্লাবন পদ্ধতিতে সমস্ত জমিতে সেচ প্রয়োগ করতে হবে।সেচ দেওয়ার ৫-৬ দিন পর অর্থাৎ মাটিতে জোঁ আসলে ছোট হাত লাঙ্গল/বিন্দা/বিদা দ্বারা জমিতে লম্বা এবং আড়াআড়ি ভাবে টেনে মাটির উপরের অংশ আলগা/ঝুরঝুরে করে দিতে হবে।


বীজতলা ও চারা রোপনঃ-

বাংলাদেশের কৃষকরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি ব্যাবহার করে বীজতলা ও চারা রোপণ করে থাকে।ঠিক ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতেও এই জাতের বীজতলা তৈরি করে চারা রোপণ করে ভালো ফলন পাওয়া যায়।


বীজ বপন ও ১ম সেচঃ-


বীজের পরিমানঃ-

১ বিঘা(৩৩ শতকে) জমিতে ১ কেজি ৮০০ গ্রাম বীজ বপন করতে হবে।


 বীজ বপনের আগের দিন--

 বীজ অবশ্যই ১-১.৫ ঘন্টা সময় রোদ্রে শুকানোর পর খোলা জায়গায় ছায়াযুক্ত স্থানে ১.৫-২ ঘন্টা শুকাতে হবে।

বিঃদ্রঃ বীজ রোদ্রে শুকানোর পর ছায়াযুক্ত স্হানে শুকানোর জন্য ফ্যানের পাখার দ্বারা অতিরিক্ত বাতাসে বীজ শুকানো যাবেনা।


বীজ বপনের দিন--

বীজ বপনের আগে ১.৫-২ ঘন্টা সময় বীজ পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে।এরপর ভিজানো বীজ জীবাণু মুক্ত করনের জন্য অন্য একটি পাত্রে কার্বোন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক ১ লিটার পানিতে ২.৫ গ্রাম মিশিয়ে আরো ১৫ মিনিট বীজ ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর বীজ ঝুরঝুরে না হওয়া পর্যন্ত রোদ্রে শুকাতে হবে।এরপর সম্পুর্ন জমিতে বীজ ছিটিয়ে বপন করে প্লাবন সেচ প্রয়োগ করতে হবে।


বিঃদ্রঃ সেচ প্রয়োগ এর সময় পানির স্রোতযুক্ত জায়গার বীজ অন্যত্র জায়গায় চলে যায় এ জন্য সেচ প্রয়োগ শেষ হওয়ার পর কিছু পরিমান বীজ স্রোতযুক্ত জায়গায় ছিটিয়ে দিতে হবে।


২য় সেচঃ-


১ম সেচ দেওয়ার ৬-৭ দিন পর অর্থাৎ মাটিতে জোঁ আসলে ২য় সেচ প্রয়োগ করতে হবে।এই সময় সেচ দেওয়ার আগে জমিতে কাটুই জাতীয় পোকা দমনের জন্য লেমডা সাইহ্যালোথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক ১০০ মিলি ৩ কেজি ইউরিয়া সারের সাথে মিশিয়ে ১ বিঘা  (৩৩ শতক) জমিতে ছিটিয়ে প্রয়োগ করার পর ২য় সেচ দিতে হবে। 


৩য় সেচঃ-


 ২য় সেচ দেওয়ার ৫-৬ দিন পর ৩য় সেচ দিতে হবে।৩য় সেচ দেওয়ার আগে জমিতে ৪ কেজি ইউরিয়া সারের সাথে সামান্য পানির সাথে ১ কেজি থিয়োভিট মিশিয়ে ১ বিঘা(৩৩ শতক) জমিতে ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।


৪র্থ সেচঃ-


৩য় সেচের ৮-৯ দিন পর অর্থাৎ মাটিতে জোঁ আসলে ৪র্থ সেচ দিতে হবে।৪র্থ সেচ দেওয়ার সময় জমিতে আগাছা থাকলে সেচ দেওয়ার আগের দিন বিকেলে পেঁয়াজের জমির জন্য নির্ধারিত ফেনোক্সাপ্রোপ ও অক্সাডায়াজন ২৫ ইসি গ্রুপের আগাছানাশক বোতলের গায়ে অনুমোদিত নির্দেশনা মোতাবেক পরিমিত মাত্রায় সমস্ত জমিতে স্প্রে করতে হবে।৪র্থ সেচ দেওয়ার ১-২ ঘন্টা আগে জমিতে থ্রিপস,জাবপোকা দমনের জন্য ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক এবং রোগ দমনের জন্য মেনকোজেব+কার্বেন্ডাজিম অথবা মেনকোজেব+ মেটালোক্সিল গ্রুপের ছত্রাকনাশক অনুমোদিত মাত্রায় পানির সাথে একত্রে মিশিয়ে সমস্ত জমিতে স্প্রে করতে হবে।এবং ৪র্থ সেচের আগে পরবর্তী সময়ে জমিতে ঘাস না জন্মানোর জন্য ৬ কেজি ইউরিয়া সারের সাথে পেন্ডিমেথালিন গ্রুপের আগাছানাশক ২০০ মিলি একত্রে মিশিয়ে ১ বিঘা(৩৩ শতক) জমিতে ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।


৫ম সেচঃ-


৪র্থ সেচের ৯-১০ দিন পর অর্থাৎ মাটিতে জোঁ আসলে   ৫ম সেচ দিতে হবে।৫ম সেচ দেওয়ার আগে জমিতে নিড়ানি দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।এর পর পোকা দমনের জন্য ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক এবং রোগ দমনের জন্য টেবুকোনাজল, মেনকোজেব+কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক,চিলেটেড জিংক অনুমোদিত মাত্রায় জমিতে স্প্রে করতে হবে।৫ম সেচের আগে ১ বিঘা (৩৩ শতক) জমিতে--

ইউরিয়া ১০ কেজি,

এম ও পি ৭ কেজি,

টি এস পি ১৫ কেজি,

এবং পরবর্তীতে জমিতে ঘাস না জন্মানোর জন্য  পেন্ডিমেথালিন গ্রুপের আগাছানাশক অনুমোদিত মাত্রায় ২ কেজি ইউরিয়া সারের সাথে মিশানোর পর সবগুলো সারের সাথে একত্রে মিশিয়ে জমিতে ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।


৬ষ্ঠ সেচঃ-


৫ম সেচের ১১-১২ দিন পর অর্থাৎ মাটিতে জোঁ আসলে ৬ষ্ঠ সেচ দিতে হবে।৬ষ্ঠ সেচের আগে নিড়ানি দিয়ে জমির আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।এই সময় নিড়ানি দেওয়ার সাথে সাথে পেঁয়াজ এর চারার ঘন জায়গায় চারা পাতলাকরন করতে হবে।এরপর জমি থেকে ঘন চারা তুলে একই জমির শুন্য/ফাঁকা স্থান পুরনের জন্য চারা লাগিয়ে দিতে হবে। জমিতে চারা পাতলা করনের পর অবশিষ্ট চারা অন্য জমিতেও সেচ প্রদানের সাথে সাথে লাগানো যাবে।৬ষ্ঠ সেচের আগে পোকা দমনের জন্য ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক এবং রোগ দমনের জন্য টেবুকোনাজল, ইপ্রোডিয়ন গ্রুপের ছত্রাকনাশক,চিলেটেড জিংক অনুমোদিত মাত্রায় জমিতে স্প্রে করতে হবে।৬ষ্ঠ সেচের আগে ১ বিঘা জমিতে (৩৩ শতক) জমিতে 


ইউরিয়া ২০কেজি

ডি এ পি ২৫ কেজি

এম ও পি ১০ কেজি

ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ৫ কেজি

দস্তা ৩ কেজি

শুধুমাত্র দস্তা ও ডিএপি সার একসাথে মিশ্রিত না করে আলাদা ভাবে আগে পরে জমিতে ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।এছাড়া সকল সার একত্রে মিশিয়ে জমিতে ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।


৭ম সেচঃ-


৬ষ্ঠ সেচের ১২-১৩ দিন পর অর্থাৎ মাটিতে জোঁ আসলে ৭ম সেচ দিতে হবে।৭ম সেচের আগে জমিতে আগাছা থাকলে নিড়ানি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এই সময় পেঁয়াজের পার্পল ব্লচ রোগের আক্রমন হতে পারে এ জন্য ৭ম সেচের আগে পোকা দমনের জন্য  ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক এবং পার্পল ব্লচ রোগ দমনের জন্য  ফ্লুওপিরাম+ট্রাইফ্লোক্সিস্ট্রবিন, টেবুকোজনাল+ট্রাইফ্লোক্সিস্ট্রবিন, ইপ্রোডিয়ন গ্রুপের ছত্রাকনাশক,পি জি আর (প্লান্ট গ্রোথ রেগুলেটর) গাছ দ্রুত বর্ধনশীল হরমোন জাতীয় ঔষধ অনুমোদিত মাত্রায় একত্রে মিশিয়ে জমিতে স্প্রে করতে হবে।৭ম সেচের আগে ১ বিঘা জমিতে (৩৩ শতক) জমিতে---

ইউরিয়া ২০ কেজি

টিএসপি ২৫ কেজি

এম ও পি ১০ কেজি

সবগুলো সার একত্রে মিশিয়ে জমিতে ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।


৮ম সেচঃ- ৭ম সেচের ১৩-১৪ দিন পর অর্থাৎ মাটিতে জোঁ আসলে ৮ম সেচ দিতে হবে।৮ম সেচ দেওয়ার আগে জমিতে আগাছা থাকলে নিড়ানি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।এই সময় পেঁয়াজ গাছের নিচে ছোট গুটি তৈরি হওয়া আরম্ভ হয়। ৮ম সেচের আগে পোকা দমনের জন্য ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক এবং রোগ দমনের জন্য ফ্লুওপিরাম+ট্রাইফ্লোক্সিস্ট্রবিন অথবা টেবুকোজনাল+ট্রাইফ্লোক্সিস্ট্রবিন, কার্বেন্ডাজিম অথবা ইপ্রোডিয়ন গ্রুপের ছত্রাকনাশক অনুমোদিত মাত্রায় একত্রে মিশিয়ে জমিতে স্প্রে করতে হবে।৮ম  সেচের আগে ১ বিঘা জমিতে (৩৩ শতক) জমিতে--

ইউরিয়া ২০ কেজি

টি এস পি ২৫ কেজি

 এই দুই প্রকার সার একত্রে মিশিয়ে জমিতে ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।


৯ম সেচঃ-


৮ম সেচের সময় জমির পেঁয়াজ গাছের নিচে পেঁয়াজ এর গুটি হওয়া আরম্ভ হলে ৮ম সেচের ২৪-২৫ দিন পর ৯ম জমিতে সেচ দিতে হবে।৯ম সেচ দেওয়ার আগে পেঁয়াজ আরো বেশি মোটা পরিপক্ক করনের জন্য ১ বিঘা(৩৩ শতক)জমিতে--

সালফেট ১০ কেজি

 সার জমিতে ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।


পেঁয়াজ পরিপক্ক ও কর্তনঃ-


৯ম সেচের ১৪ -১৫ দিন পর গাছ হেলে মাটিতে পড়ে গেলে পেঁয়াজ পরিপক্ব হয়ে পেঁয়াজ কর্তন/তোলার উপযুক্ত হয়।


পেঁয়াজের ফলনঃ- 


১ বিঘা (৩৩ শতক) জমিতে ১৮০-২০০ মন পর্যন্ত পেঁয়াজ উৎপাদন হয়।


পেঁয়াজ সংরক্ষণঃ-


 পেঁয়াজ কর্তন/তোলার পর পরিপক্ক পেঁয়াজ এর শুকনো বোটা আঁটি করে বেঁধে বাঁশের খুঁটিতে টাঙিয়ে এবং মাচা পদ্ধতি ব্যবহার করে ঘরের  ভিতর ৯-১০ মাস সংরক্ষণ করা যায়।এবং সংরক্ষিত পেঁয়াজ এর বাল্ব/কন্দ মাটিতে রোপন করে দানা বীজ উৎপাদন করা যায়।


মোঃ ইখলাছ উদ্দীন

উপ-সহকারী কৃষি অফিসার

মুজিব নগর,মেহেরপুর।

ব্লকঃ- আনন্দবাস।

মোবাইলঃ- ০১৭২৩০৯৬৪৬৮.

রসুনের উপকারিতা

.

রসুনের উপকারিতা


রসুনের উপকারিতা

ইংরেজি নাম : রসুন

সংস্কৃতরসুন, রাসন, উগ্রগন্ধ, মহোষধ, ম্লেচ্ছকাণ্ড, যবনেষ্ট, রসোনকহিন্দিরসুন, রসুনবাংলারসুননেপালিলাসুন (লাসুনমারাঠিলাসুন (লাসুন); মালায়লাম- ভেলুল্লি 

ইংরেজিসাধারণ রসুনআরবি - সোম, ফেনাফার্সি - দ্রষ্টা।

 

ভূমিকা

 এটি বহু শতাব্দী ধরে প্রতিটি ঘরে মসলা এবং ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কাশ্যপ-সংহিতায় রসুনের কলক অনেক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়েছে। রসুনে অম্ল রস ছাড়া পাঁচটি রসই আছে। এর গন্ধ উগ্র, তাই একে উগ্রগন্ধও বলা হয়।

উপরে উল্লিখিত রাসন প্রধান প্রজাতি ছাড়াও এর নিম্নলিখিত দুটি প্রজাতি পাওয়া যায়। যেগুলো ওষুধে ব্যবহৃত হয়।

 

·        অ্যালিয়াম শোনোপ্রাসাম লিন। (সদ্রপুষ্প রাসন) - সম্পূর্ণ পরিপক্ক হলে, এর বাল্বগুলি একটি পাতলা, সাদা রঙের আবরণে আবৃত থাকে, এর কান্ড মসৃণ এবং গোলাকার, এর পাতাগুলি শুকনো (খুঁটি), গোলাকার, বাদামী রঙের এবং চকচকে হয়। এর ফুলে হালকা বেগুনি আভা রয়েছে। এর আলু অন্ত্রের কৃমি নিরাময়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। এর পাতা এবং মিষ্টি আলুতে অ্যান্টি-অক্সিডেশন কার্যকলাপ পাওয়া যায়।

·        Allium tuberosum Roxb. (ওয়াইল্ড রাসন)- এর পাতা চ্যাপ্টা এবং সবুজ রঙের। এর ফুল সাদা রঙের। পাহাড়ি অঞ্চলে এর পাতা ডাল, তরকারি এবং সবজি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এর বীজ স্পার্মাটোরিয়া নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়।

 

 

আয়ুর্বেদিক বৈশিষ্ট্য এবং প্রভাব

রসুনের মূল মিষ্টি এবং কোলেরাটিক।

রসুন তীক্ষ্ণ, তীক্ষ্ণ, নোনতা, তেতো, (অম্ল-নিরোধক খোঁচা), তীক্ষ্ণ, গুরু, উষ্ণ রক্তনাশক।

ইহা দীপন, ক্ষুধাবর্ধক, ব্রাহ্ন, বৃষ, আলিফাতিক, হজমকারী, সরক, ভগ্নাসন্ধকারক, পিছল, গলার জন্য উপকারী, পিত্ত রক্তবর্ধক, ইহা শক্তি চরিত্র সৃষ্টিকারী, বুদ্ধি বৃদ্ধিকারী, চোখের জন্য উপকারী, রাসায়নিক, ধাতব, চরিত্র, ইহা। চুল এবং ভয়েস নিখুঁত করে তোলে যে এক.

ইহা হেঁচকি, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী জ্বর, পেটের পীড়া, অসুখ, ঝোপ, রুচিহীনতা, কাশি, প্রদাহ, জ্বর, কুষ্ঠরোগ, শ্বাসকষ্ট, কৃমি, বদহজম জ্বরের উপশমকারী।

রসুন খাওয়ার অযোগ্য ব্যক্তিরা 

 জন্ডিস, পেটের রোগ, আলসার, প্রদাহ, তৃষ্ণা, পানিশূন্যতা, বমি, বিষাক্ত ব্যাধি, রোগগত রোগ, চোখের রোগ এবং দুর্বল শরীরের রসুন খাওয়া উচিত নয়।

 

যারা রসুন খান তাদের জন্য উপকারী ক্ষতিকর উপাদান- অ্যালকোহল,

 আমিষ অম্ল জাতীয় খাবার যারা রসুন খান তাদের জন্য উপকারী।

ব্যায়াম, তাপ (রোদ), রেগে যাওয়া, অতিরিক্ত সতেজ, দুধ গুড় খাওয়ার জন্য রসুন খাওয়া ক্ষতিকর।

যে ব্যক্তি প্রচুর ঠাণ্ডা জল, গুড় দুধ খান এবং পিষ্টী (উড়দ পীঠ), অম্ল রস মদ্যপান সহ অত্যন্ত তীক্ষ্ণ পদার্থ এবং বদহজম (বদহজম) এর প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করেন তার পক্ষে এটি অশুভ।

 

রসুনের কন্দনিউমোনিয়া, বাধা, বাত, জ্বর, উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কৃমি রোগ, ব্যাকটেরিয়া ছত্রাকজনিত সংক্রমণ

একটি উপশমকারী আছে।

 

রাসন 

হাইপারটেনসিভ এবং আর্টেরিওস্ক্লেরোটিক রোগীদের সিস্টোলিক এবং ডায়াস্টোলিক ধমনী উত্তেজনা উন্নত করে এবং রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।

এটি হাইপারলিপিডেমিয়া এবং হালকা উচ্চ রক্তচাপের চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত হয়।

এর ব্যাকটেরিয়াঘটিত বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

 

ডোজ এবং ঔষধ ব্যবহারের পদ্ধতি

v অ্যালোপেসিয়া (টাক পড়া)- তিলের তেলে রসুন সিদ্ধ করে ছেঁকে সেই তেল মাথায় লাগালে অ্যালোপেসিয়ায় উপকার পাওয়া যায়।


v শিরোগাত দাদরুরসুন পিষে মাথায় লাগালে মাথার দাদ সেরে যায়।


v মাইগ্রেনরসুন পিষে মাথায় লাগালে মাইগ্রেনের ব্যথা দূর হয়।


v কানের ব্যথারসুন, আদা, তেঁতুল, মুলা কলার রস কানে সামান্য উষ্ণ (ঈষদুষ্ণ) দিলে কানের ব্যথা নিরাময় হয়।


v রসুনের নির্যাসে মুড়ে আগুনে গরম করে রসুনের রস বের করে সকালে - ফোঁটা রস কানে দিলে বাত পিত্তজনিত কানের নিঃসরণে উপকার পাওয়া যায়।


v রসুন স্বরসে লবণ মিশিয়ে - ফোঁটা কানে দিলে কানের ব্যথা উপশম হয়।


v সরিষার তেলে রসুন সিদ্ধ করে ছেঁকে - ফোঁটা কানে দিলে টিনিটাসে আরাম পাওয়া যায়।


v হেঁচকি - শ্বাসপ্রশ্বাস (অ্যাস্থমাহেঁচকির বেগ এবং শ্বাসকষ্ট (অ্যাস্থমা) নাকে রসুন পেঁয়াজের রস খেলে উপকার পাওয়া যায়।


v স্তন বড় হওয়ারসুন খেলে স্তন বড় হয়।


v হাঁপানি5 মিলি রসুনের রস হালকা গরম পানির সাথে খেলে হাঁপানিতে উপকার পাওয়া যায়।


v হৃদরোগ10 মিলি রাসনের ক্বাথ দুধে মিশিয়ে অল্প পরিমাণে ব্যবহার করলে উদবর্ত, গৃহী, রাজয়ক্ষ্ম হৃদরোগে উপকার পাওয়া যায়।


v ভাতজ গুলম(রসুন ক্ষীর) 200 গ্রাম শুকনো রসুনের খোসা ছাড়াই 8-8 বার দুধ জল মিশিয়ে, দুধ অবশিষ্ট না থাকা পর্যন্ত রান্না করে, ছেঁকে (15-20 মিলি পরিমাণ) পান করলে পেট ফাঁপা, পেট ফাঁপা, বুকজ্বালা, দ্রুত ব্যথা হয়। টাইফয়েড (ম্যালেরিয়া), হৃদরোগ, ফোড়া এবং প্রদাহে উপকারী।


v বিসুচিকালেহসুনাদি বটি (রসুন, জিরা, শিলা লবণ, সালফার, শুকনো আদা, গোলমরিচ, লম্বা গোলমরিচ, হিং) খেলে বিসুচিকা রোগে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়।


v ভাতকফজন্যাশুলরসুনের কলক (1 গ্রাম) এর সাথে কাঞ্জি মিশিয়ে সকালে খেলে বাতকফজন্যাশূল উপশম হয় এবং গ্যাস্ট্রিকের আগুন জ্বলে।


v প্লীহা বড় হওয়ারসুন, পিপ্পলির মূল এবং হরিতকি সমান অংশ পিষে এবং কলক বা গুঁড়া করে প্রতিদিন 1-2 গ্রাম খেলে প্লীহা রোগ নিরাময় হয়।


v কৃমি রোগ- 1-2 গ্রাম রাসনের কুঁড়ি খেলে অন্ত্রের কৃমি, ডায়রিয়া প্রবাহ নিরাময় হয় 


v যোনিজনিত রোগপ্রতিদিন সকালে রসুনের রস (5 মিলি) পান করে এবং দুধ ইত্যাদি খাবারে খেলে যোনি রোগ সেরে যায়।


v বাত -বাত 1-2 গ্রাম মিহি রসুনের কুচি ঘি সহকারে খেলে এবং ঘি সমৃদ্ধ খাবার খেলে বাত সেরে যায়।


v রসুনের রস দিয়ে তৈরি তিলের তেল ব্যবহারে সব ধরনের গাউট রোগ নিরাময় হয়।

v গাউটে রসুনের ব্যবহার সবচেয়ে ভালো।


v রাসায়নিক উপায়ে রসুন খেলে পিত্ত রক্ত ​​ছাড়া বাকি সব বাত কমে যায়।

v প্রতিদিন স্বরস থেকে রসুনের লবঙ্গ এবং সিদ্ধ তেল খেলে অনিবার্য গাউট রোগেও দ্রুত উপকার পাওয়া যায়।


v অর্দিতরসুনের লবঙ্গ (- গ্রাম) তেল ঘি সহযোগে খেলে অর্দিতে (মুখের পক্ষাঘাত) উপকার পাওয়া যায়।


v রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসরসুনের লবঙ্গ (1-2 গ্রাম) তিলের তেল এবং শিলা লবণের সাথে খেলে সমস্ত বাত রোগ আমাশয় নিরাময় হয়। রসুনের লবঙ্গ দুধ, তেল, ঘি বা ভাতের সঙ্গে মিশিয়ে প্রতিদিন দিন খেলে বাতরোগ, আমাশয়, গেঁটেবাত, প্লীহা, শূল, শুক্রদোষ প্রভৃতি রোগ সেরে যায়। শীতকালে অগ্নি বল অনুসারে শস্য থেকে তৈরি খাবারের সাথে রসুন খাওয়া উচিত।


v হনুস্তম্ভ - (রসনবতক) রসুনের সাথে উরদ ডাল পিষে, শিলা লবণ, আদা গুঁড়া এবং হিং গুঁড়া যোগ করে, এর ভাতক তিলের তেলে ছেঁকে খেলে হনুস্তম্ভে (ঘাড় শক্ত হওয়া) উপকার হয়।


v রসুন (1-2 গ্রাম) শিলা লবণ তিলের তেল মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খেলে হনুগ্রহে (ঘাড় শক্ত হওয়া) উপকার পাওয়া যায়।


v রসুন, শুকনো আদা এবং নিগুন্ডির ক্বাথ (10-15 মিলি) খেলে আম হজমে সাহায্য করে এবং বাত রোগে উপশম হয়।


v রসন কলক পানির অনুপাতে - গ্রাম করে খেলে বাত (প্যারালাইসিস), সর্বাঙ্গভাত, আকংবৎ, অপস্মর, মন্দাগ্নি, বিষ, ম্যানিয়া (পাগলামি), ভাগনা, শূল (ব্যথা) ইত্যাদি রোগে উপকার পাওয়া যায়।


v পেশীর ব্যাথা- রাসন স্বরসে নুন লাগালে পেশীর ব্যাথা মচকে উপকার পাওয়া যায়।


v বাত রোগ- তেলে রসুন সিদ্ধ করে ছেঁকে মালিশ করলে বাতের ব্যাধি সেরে যায় 

v বাতঃরসুনের রসে 5 মিলিলিটার ঘি মিশিয়ে পান করলে বাত রোগে উপকার পাওয়া যায়।


v কৃমি- আলসারে কৃমি থাকলে আলসারে রসুনের মিহি পেস্ট লাগালে কৃমি ধ্বংস হয়।

v বিদ্রাধিরসুন পিষে লাগালে পিডকা (পিম্পল) বিদ্রাধি উপশম হয়।

v চর্মরোগ: রসুন পিষে ক্ষত, প্রদাহ, ফুসকুড়ি এবং ব্রণে লাগান।

v চর্মরোগসরিষার তেলে রসুন সিদ্ধ করে ছেঁকে, তেল মালিশ করলে ত্বকের রোগ নিরাময় হয়।

v ম্যালেরিয়াখাবারের আগে রসুনের পেস্ট তিলের তেলের সাথে মিশিয়ে খেলে ম্যালেরিয়ায় উপকার পাওয়া যায়।

v 1-2 গ্রাম রসুনের পেস্ট ঘিয়ের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খেলে বাতের ব্যথা উপশম হয়।

v জ্বর , সর্দি জ্বরে রসুনের ব্যবহার উপকারী।

v রসায়নপ্রতিদিন 1 গ্রাম রসুনের মধ্যে 5 গ্রাম ঘি এবং সামান্য মধু মিশিয়ে এক বছর ধরে তা খেলে এবং অনুপাতে দুধ পান করলে শরীর সমস্ত রোগ থেকে মুক্ত হয় এবং দীর্ঘায়ু হয়।  সময় খাদ্যতালিকায় ভাত দুধ ব্যবহার করা উচিত।

v রসুন, কুলকুচি ঘি সমপরিমাণ মিশিয়ে দশ দিন রেখে সেবন করলে রাসায়নিক গুণাগুণ পাওয়া যায় এবং রোগ নিরাময় হয়।

v বিচ্ছুর বিষশুকনো আমের গুঁড়ার সঙ্গে রসুন পিষে বিছার কামড়ের স্থানে লাগালে কামড়ের বিষাক্ত প্রভাব কমে যায়।

 


Last post

ড্রাগন ফলের পরিচয়

  উৎপত্তি ও ভৌগলিক বিস্তৃতিসহ ড্রাগন ফলের পরিচয়     " ড্রাগন ফল " বা ড্রাগন ফ্রুট অসমৃদ্ধ এবং বিশেষ রূপের ফল , য...