Saturday, June 26, 2021

লেবু গাছের পরিচর্য

 

লেবু গাছের পরিচর্য।


বর্ষায় লেবু গাছের জন্য কিছু আলাদা পরিচর্যা নিতে হয়, শেকড় পচাঁ ও পাতা লাল বা বাদামী রং হয়ে যাওয়া কমন রোগ। গাছকে সুস্থ, সবুজ ও সতেজ রাখতে গাছের গোড়া সব সময় পরিস্কার রাখুন, গোড়াতে সুর্যের আলোর অতিব প্রয়োজন।

কোন ক্রমেই যেন গোড়াতে দীর্ঘদিন/দির্ঘক্ষণ পানি জমে না থাকে তার জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা জরুরী।

অতিবৃষ্টিতে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করবেন না।

মাঝে মধ্যেই গাছের গোড়াসহ মাটিতে, জৈব ছত্রাকনাশক যেমন ট্রাইকস্ট/বায়োডার্মা প্রতিলিটারে ৩/৫গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করবেন এতে পচনরোগ রোধ করবে এবং প্রতি এক থেকে দের মাস পরপর গাছের গোড়ার মাটিতে দানাদার যেমন কার্বোফুরান/ফুরাডান কিটনাশক গাছের বয়স অনুযায়ী পরিমান

মত উপরি প্রয়োগ করবেন বর্ষার দিনে মাটিতে যে রস থাকে তাতে মাটির গভিরের কানায় কানায় কিটনাশকের কার্যকারিতা দ্রুত পৌছে যায় এতে গোড়ার মাটির ভেতরের যে সকল ক্ষতিকারক কিট থাকে তা সহজেই দমন হবে ও শেকড় বাড়বে, শেকড় ঠিক তো আপনার গাছ ঠিক।


১৫/২০দিন পরপর ম্যানকোজেব+কার্বোন্ডাজিম+

কপার অক্সিক্লোরাইড প্রতি লিটারে ৩/৫গ্রাম হারে মিশিয়ে গাছ ভালো করে ভিজিয়ে স্প্রে করবেন।

আশা করি বর্ষাতে আপনার গাছ ভালো থাকবে (পরিক্ষিত)।

(স্থান ভেদে পরিবর্তনীয় হতে পারে।)

বিঃদ্রঃ আমি শুধু বর্ষাতে গাছের সাধারনত যে সমস্যা হয় ও তার প্রতিরোধ ব্যাবস্থা বিষয়ে সংক্ষেপে বলার চেস্টা করলাম, ভুলত্রুটি মার্জনীয়।

"ধন্যবাদ"

FB LINK--SA SUMON KHAN

Monday, June 21, 2021

গরু মোটাতাজাকরণ



গরু মোটাতাজাকরণ খামারী হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান।

গরু মোটাতাজাকরণ খামারী হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান।

--------------------------------------------------
আপনি সফল গরু মোটাতাজাকরণ খামারী হয়ে উঠতে পারবেন না।
আপনি যদি পেশাদার গরু মোটাতাজাকরণ খামারী হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান তাহলে আপনার লক্ষ্য হতে হবে সারাবছর মাংস উৎপাদনের জন্য গরু মোটাতাজাকরণ করা! কোরবানি ঈদের বাজার হবে আপনার অপশনাল টার্গেট,এটা মূলত যারা অন্য কৃষিজ বা অন্যান্য পেশায় জড়িত আছে তাদের সিজনাল ব্যবসা। আর সারা বছর মাংস উৎপাদন করতে হলে আপনাকে কিছু বিশেষ বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে যার জন্য কিছুটা বাস্তব জ্ঞানের প্রয়োজন আছে যা আপনি ক্রমান্বয়ে অর্জন করবেন!

গরু মোটাতাজাকরণে গরুর জন্য সুষম খাদ্য সরবরাহ করাটাই মূল ব্যাপার নয়, আরো কিছু জরুরী বিষয় রয়েছে। যেমন কোন পর্যায়ের গরু আপনি মোটাতাজাকরণের জন্য বাছাই করবেন। এই পর্যায়ে স্বাস্থ্যগত দিকটা যখন বিবেচনা করা হয় তখন সেই অবস্থাটাকে বলা হয় বিফ ক্যাটেল বডি কন্ডিশন স্কোর। এই অবস্থায় স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনা করে কোন অবস্থার গরু আপনি মোটাতাজা করার জন্য কয়দিন পালন করবেন সেটা একটা গরুর স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনা করে বাছাই করা হয়। এই জন্য বিফ ক্যাটেলের বডি কন্ডিশন স্কোরিং করে নির্দিষ্ট করা হয় এবং সেই অনুযায়ী গরু বাছাই করা হয়। বডি কন্ডিশন স্কোর যত কম হবে স্বাস্থ্য তত কম থাকবে, বডি কন্ডিশন স্কোর যদি বেশী হয় স্বাস্থ্য তত বেশী হবে। এখন আপনি গরু কতদিন পালন করে বিক্রয় উপযোগী করবেন তার উপর নির্ভর করবে আপনার গরুর বডি কন্ডিশন স্কোর কেমন হওয়া উচিৎ। এটা প্রাকটিক্যালি গরু পালন করতে করতে আপনার আয়ত্তে চলে আসবে একসময়।
এবার আসা যাক গরুর বয়সের ব্যাপারে। গরুর বয়স যখন ১৮-৩৬ থাকে তখন সে সবচাইতে বেশী বাড়ে। মানে ২-৪ দাঁত বয়সে গরু সবচাইতে বেশী বাড়ে। এই বয়স সীমার আগে বা পরে গরুর দেহের বৃদ্ধি কম হয় তূলণামূলক ভাবে। তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই বেশী বৃদ্ধিকালের সুযোগ টা আমাদের নিতে হবে লাভজনক ভাবে গরু মোটাতাজা করার ব্যবসায়।
কিছু গরুর শারীরিক বৈশিষ্ট্য- বেঁটে মুখের গরু খাওয়া দাওয়ায় পটু হয়। লম্বাটে মুখের গরু খাওয়া দাওয়ায় তেমন পটু নয় বা ঝামেলা করে। যেসব গরুর অস্থি সন্ধি প্রশস্ত এবং বড় সেগুলি বাড়ে ভালো। যেসব গরু শিংয়ের গোড়া মোটা আগা সরু সেগুলিও ভালো বড় হয়। গরুর গলকম্বলে ভাঁজ বেশী এবং তার শরীরের চামড়া ডিলা থাকলে সেটা বাড়বে ভালো। গরুর চোখ যাতে উজ্জ্বল হয়, নাকের আশেপাশে ঘাম জমে এমন গরু বাছাই করবেন সবমসময়।
গরুর জাত বাছাই লাভজনক গরু মোটাতাজাকরণের জন্য আরেকটি অত্যন্ত জরুরী বিষয়। দেশী বড় জাতের কিছু গরু আছে কিন্তু সেগুলি সবাই চিনতে পারে না,অভিজ্ঞতার আলোকে সেগুলি চেনা যায়। এই ক্ষেত্রে ক্রস জাতের গরু মোটাতাজা করণের জন্য বিশেষ উপযোগী। যেমন দেশী-ফ্রিজিয়ান ক্রস,দেশী -শাহীওয়াল ক্রস, দেশী-সিন্ধি ক্রস,দেশী-শাহীওয়াল-সিন্ধি ক্রস, ফ্রিজিয়ান-শাহীওয়াল ক্রস বা শাহীওয়াল ফ্রিজিয়ান ক্রস। তবে শেষের সংকর জাত দুটি মোটাতাজারকরণের ক্ষেত্রে সবচাইতে ভালো,এমনকি ক্রস ব্রাহমাও এদের ধারে কাছে আসে না বৃদ্ধির বিবেচনায়, বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। বংশ পরম্পরায় কিছু দেশাল আছে যেগুলি বিশাল হয়,কিন্তু এদের খুঁজে বের করা কঠিন!

গরু বিক্রয়ের বাজারের ব্যাপারে আমি তেমন একটা গুরুত্ব দেই না পেশাদার গরু মোটাতাজাকরণের ক্ষেত্রে। কারণ আপনি যখন পেশাদার ভাবে এটা করবেন আপনার লক্ষ্য থাকবে কসাইয়ের কাছে গরু বিক্রয় করা।

যাই হোক, আমার ক্ষুদ্র বাস্তব অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান থেকে কিছু ব্যাপারে আলোচনা করলাম লাভজনক ভাবে গরু মোটাতাজাকরণের ব্যাপারে। হয়তো আপনাদের কাজে আসবে!





Wednesday, June 16, 2021

আমি কৃষক সংগ্রাম আমার জীবন

 

সংগ্রামী জীবন।

আমি খুলনা জেলার সাজু,বয়স ছাব্বিশ চলে।এক বছর ধইরে মা পাগল হইছে ঘরে বউ আনতি হবে,এ্যাদ্দিন মারে বুঝোউয়ে শুনোয়য়ে রাখিছি মাথা গুজার একটা ঠাঁই কইরে যা ভাবার ভাইবো...

আইজকে বুধবার পশ্চিম বাড়ির সালাম কাক্কুরে নিয়ে বাজারে আইছি নতুন ঘরের টিন কিনতি। টিনের দিকি তাকালি চোখ দুডো ঝাপসা হইয়ে বুক ফাইট্টে কান্না আসে। আইজ কে যদি বাবা বাঁইচে থাকতো...।
বাবা যেদিন দুপুরে হাওলাদার গে বাগানে আমগাছে ফাঁস দিছিল আমার বয়স তখন নয় বছর,মনে আছে নীচের পাটির দুডো দাঁত পড়িছে,উপরের একটা নড়ে।ছোট ভাই রাজু তিন বছরের বাচ্চা,সারাদিন ক্ষিদের চোটে মার পিছে ঘ্যান ঘ্যান করে। মা থালার মদ্যি কয়ডা মুড়ি ছিডায়ে ওরে বারান্দায় বসায়ে নিজে মেয়ের শোকে কাঁদতি বসে।এমন সময় বাহিরে শোরগোল শুইনে আমি দৌঁড় দিই,দ্যাহি লোকজন রশি কাইটে বাবার শইলডা নামাচ্ছে! আমি একটা চিৎকার দিয়ে পইড়ে গেছি,তারপর আর কিছু মনে নেই
যহন হুঁশ ফিরিছে দেহি বুনির কবরের পাশ দিয়ে বাবার কবর খুঁড়তিছে লোকে।

আমাগে দুই ভাইয়ের মাঝখানে সুন্দর ফুটফুইটে একডা বুন ছিল, বুনির গাল দুডো ছিলো ক্যামুন ফুলাফুলা,আমি মায়া কইরে ওর গাল টাইনে দিতাম,অরে নিয়ে বিলি শাপলা আনতাম। বুনডার আমার কি যে হলো মাস ধইরে ক্যাবল জ্বরে ভুগে।বাবা ঔষধের দুকানে দুডো বড়ি আইনে খাওয়ালি জ্বর কমে,পরদিন আবার বাড়ে।

মা' তাবিজ কবচ, পানিপড়া আনে, লতা পাতা চেঁইচে খাওয়ায়,গরীবের যেমন চিকিৎসা...। দিন কয় পর অর হাতে পায়ে পানি নাইমে ফুইলে ওঠে,পেটে অসইয্য ব্যাথায় ছটফট করে,বুনির কষ্ট সইহ্য করতি না পাইরে বাবা সুদের উপর টাহা নিয়ে বড় ডাক্তার দ্যাহায়,কিন্তু ততদিন সময় ফুরায়ে গ্যাছে...।বুনডারে কবরে শোয়ায়ে শোকে দুঃখে বাবা একেবারে চুপ মাইরে গেলো,মায় বুনির ছিঁড়া ফ্রকডা বুকি জড়াইয়ে বিলাপ কইরে কান্দে।
পেটের খিদের কাছে শোক বেশীদিন টিকতি পারেনা,বাবা আবার পরের ভুঁইতি কামলা দিতি যায়,মা যায় কাজী বাড়ির ধান ভানতি...।

সেইদিন হলো শনিবার, সইন্ধায় বাবা বাজারে গেলি পাওনাদার আইসে সামনে খাড়ায়,তিনমাস হয়ে গেছে বাবা কোন সুদ দিতি পারিনি। হুমকী ধমকির মুখি বাবা হাতজোড় কইরে আর কয়দিন সময় চালি মহাজনের শক্ত হাতের চড় পড়ে বাবার গালে, তাতে ও মহাজনের ঝাল কমেনা,শাসিয়ে দেয় - সামনের হপ্তায় টাহা দিতি না পারলি ২শতকের বসত ভিইটে লেইখে দিতি হবে। শোকে,দুঃখি,অপমানে বাবা পরদিন দুপুরি আমগাছে.......
তারপর... বাবাহীণ সংসারে খেয়ে না খেয়ে মা আর ছোট ভাইডারে সঙ্গী কইরে চলে বাঁচার লড়াই। সেই নিদারুন কষ্টের কথা কওয়ার ভাষা আমার জানা নাই,তয় একডা কথা বুইঝিছি-সৎ পথে থাইকে লড়াই করলি আল্লাহ ও মুখ তুইলে চায়। পাঁচ বছর আগে মায়ের পরামর্শে সাহস কইরে অন্যের জমিন পত্তন নিইয়ে শুরু করিছি পেয়ারা চাষ....। বছর ঘুইরে কিছু লাভের মুখ দ্যাকলাম।সাহস গেলো বাইড়ে, বাড়ায় দিলাম চাষের পরিমান। এখন লোকে আমারে চিনে একজন সফল চাষী হিসেবে,আনন্দে গর্বে বুকটা আমার ফুইলে ওঠে।

হাজার আনন্দের বড় কষ্ট -- এই সুখ দেখার জন্যি বাবাটা বাঁইচে নাই। একডা লাল জামা,চুড়ি, ফিতের জন্যি বায়না ধরার বইনডে নাই.....
আমি কৃষক সংগ্রাম আমার জীবন।
ভাল থাকবেন আপনারা কথা হবে আবার সবুজে সবুজে।

Wednesday, June 2, 2021

ছাদ কৃষির জন্য এক ডজন টিপস

 ছাদকৃষির জন্য এক ডজন টিপস ---------


ছাদ বাগানীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। টবে,ড্রামে গাছ লাগানো হয়। কেউ ফল ,কেউবা সবজির গাছ লাগান। কেউ সফল হন। কেউ সফল হন না। ছোট ছোট কিছু ভুল বাগানীরা করে থাকেন। সে কারণে যত্ন নিলেও ফল আসে না। ছাদ বাগানীদের জন্য কিছু টিপস দেয়া হলো। যা মানলে সফলতা পাওয়া সহজ হতে পারে। প্রথমেই মনে রাখতে হবে,টবে বা ড্রামে গাছ লাগালে তাকে খাবার দিতে হবে। প্রকৃতিতে বিদ্যমান গাছের মত সে খাবার সংগ্রহ করতে পারে না। রোগ বালাই হলো কিনা সেটাও বুঝে ব্যবস্থা নিতে হবে। ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে।


এক। মাটির সাথে অবশ্যই কিছু কোকোপিট মিশাবেন। গাছের গোড়া শ্যাত শ্যাতে হতে দিবেন না। শ্যাতশ্যাতে হলে অসংখ্য রোগ হবে। মাটি ভেজা থাকবে তবে শ্যাতশ্যাতে না। কেকোপিট মিশালে পানি কম দিলে হবে। কোকোপিট (নারিকেলের ছোবলার গুড়া) পানি ধরে রাখে। অতি বৃষ্টি হলে গোড়ায় পানি জমতে দেয় না। হালকা হওয়ায় ছাদে ওজনের চাপ পড়ে না। এছাড়া কোকোপিটে কিছু পুষ্টি উপাদান আছে। যা গাছের বৃদ্বিতে সহায়তা করে। কোকোপিটে চারা দ্রত গজায়,বড় হয়। মাটির চেয়ে কোকোপিটে চারা ভালো হয়।


দুই। গাছের জন্য বিরিয়ানি হলো শরিষার খৈল পচা পানি। মাটির হাড়িতে খৈল পচাতে হবে। নিন্মে পাচ দিন। সাত দিন কিংবা বা পনের দিন হলে উত্তম। অল্প পানিতে পচিয়ে তার সাথে আরো পানি মিশিয়ে দিতে হবে। এটি গাছের জন্য অত্যন্ত উপকারী। একটু গন্ধ হয়,তাই অল্প একটু গুড় দিতে পারেন। ছাদে হাড়িতে পচালে বাসায় গন্ধ আসবে না। বৃষ্টির সময় খৈল পচা পানি দিবেন না। পুকুরের নিচে থাকা পাক কাদা গাছের জন্য খুব উপকারী।


তিন। আমরা জানি, মাটিতে অসংখ্য ক্ষতিকর ছত্রাক থাকে। যা গাছকে মেরে ফেলার জন্য যথেস্ট। তাই মাটি রেডি করার সময় কিছুটা বায়োডামা সলিট দিবেন। এটি উপকারী ছত্রাক। মাটিতে ক্ষতিকারণ উপাদানগুলো মেরে ফেলে। আবার জৈব সারের কাজও করে। গাছের জন্য মাটি হবে ঝুরঝুরে,হালকা।

চার। যাই লাগান না কেন। ভালো জাতের বীজ কিনা নিশ্চিত হয়ে নিবেন। ভালো বীজে ভালো ফসল হবে। নতুবা যতই যত্ন নিন না কেন। সব পরিশ্রম বেলা শেষে জলে যাবে। বীজ থেকে নিজে চারা উত্তম। কারণ বাজার থেকে যে চারা কিনবেন। সেটার জাত ভালো হবে। সে নিশ্চয়তা কোথায়? ছত্রাক নাশক দিয়ে বীজ শোধন করে নেয়া উত্তম। পদ্বতি হলো, ছত্রাক নাশক দেয়া পানিতে কিছূটা সময় বীজ ভিজিয়ে রাখতে হবে। ম্যানসার,মেটারিল দুটি ছত্রাকনাশক।


পাচ। গাছ বেশী তো ফলন বেশী। এটি ভুল ধারনা। অল্প জায়গায় বেশী গাছ লাগানো যাবে না। গাছ পাতলা করে লাগাতে হবে। বেশী লাগালে গাছ প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবে না। একটি ফলের ক্রেটে মাত্র দুটি গাছ। একটি টবে একটি গাছ। ক্রেট বা টবে পানি নিষ্কাসন এর ব্যবস্থা রাখতে হবে।


ছয়। ছাদে মাচা দেয়া সমস্যা। কারণ ঘুটি থাকে না। এ জন্য ফলের ক্রেটের চারপাশে লাঠি বেধে সহজে মাচা দেয়া যায়। লতা পাতা জাতীয় গাছ লাগানোর পাত্র একটু গভীর হলে উত্তম। গাছের জন্য সবচেয়ে বেশী ভালো জৈব সার হলো পাতা পচা সার,তারপর ভার্মি কম্পোস,তারপর গোবর সার। পাতা পচা সার সহজলভ্য নয়। দাম বেশী। কিন্ত ভার্মি কম্পোস(কেচো সার) সহজলভ্য। মাটির সঙ্গে মিনিমাম ৪০% জৈব সার দেয়া উত্তম।


সাত। নীম কীটনাশক এমন একটি জিনিস। যেটাকে ক্ষতিকারক পোকা মাকড় খুব অপছন্দ করে। এটি দিলে তারা বিরক্ত বোধ করে। গাছে বাসা বাধতে পারে না। প্রতি সাত দিনে একবার সব গাছের পাতায় নিম কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। মাসে একবার ইপসম সল্ট স্পে করে দেয়া উত্তম। অণুরুপভাবে মাসে একবার পানির সঙ্গে হাইডোজেন পার অক্সাইড মিশিয়ে স্পে করা ভালো।


xxxxxxxxx

আট। ডাটা,পুইশাক, লালশাক,ধনেপাতা এসব লাগাতে পারেন। মাত্র ২৫ দিনে খেতে পারবেন। লালশাক লাগালে নেট দিয়ে ঘিরে দিবেন। শাকপাতা লাগালে দ্রত আউটপুট পাবেন। যা আপনাকে প্রেরনা দিবে। পুইশাক গাছের পাতায় দাগ হলে পাতা কেটে দিন। অথবা ছত্রাক নাশক স্প্রে করেন। অথবা গাছ উঠিয়ে আবার লাগান। ইউরিয়া সার দিলে পুইশাক দ্রত বাড়বে। শষা গাছের বৃদ্বির জন্য ডিএপি সার দিতে ভালো হবে। শসা গাছে ছাড়া ছাড়া ছত্রাক নাশক স্পে করতে হয়। খুব রোদ,গাছের গোড়ায় মালচিং করে দিয়ে উত্তম ফল মিলবে। মালচিং হলো গাছের গোড়ায় বিশেষ পলিথিন কিংবা শুকনো পাতা,খড় দিয়ে ঢেকে দেয়া।


নয়। ফুল আসার পরে প্রানোফিক্স অথবা মিরাকুরান গাছের পাতায় শেষ বিকালে স্পে করবেন। বাসায় দুইটি গ্রুপের ছত্রাক নাশক রাখা ভালো। যেমন ম্যানসার,মেটারিল।  ১৫ দিনে একবার স্প্রে করবেন।  এগরোমিন্ড গোল্ড অনুখাদ্য বা অন্য কোন অনুখাদ্য বাসায় রাখতে হবে। মাসে নিন্মে একবার স্পে করে দিবেন। 


অতিরিক্ত গরম,বৃষ্টি,খাদ্যের অভাব, গাছ রোগাক্রান্ত,আবহাওয়া দ্রত আপডাউন করা ইত্যাদি কারণে ফুল ঝরে পড়তে পারে। আবার পরাগায়ন না হলে ঝরে পড়তে পারে। এ জন্য হাত পরাগায়ন করতে হবে। পুরুষ ফুলের পরাগদন্ড নারী ফুলে গর্ভে ঘষে দিতে হবে।



দশ। ছাদ বাগানে গাছ মারা যাবার অন্যতম কারণ পানি বেশি বা কম দেয়া।  যতটুকু লাগে ঠিক ততটুকু পানি দিতে হবে।  কোন গাছের কি চাহিদা,রোগ একটু স্টাডি করলে সহজে সফল হতে পারবেন।


এগার। গাছের পাতার নিচে খেয়াল করবেন। বেগুন গাছের পোকা মারার জন্য সেক্স ফোরেমান ফাদ লাগাবেন। ডগা ছিদ্র বা ফল ছিদ্র করলে সাইপারমেত্রিন গ্রুপের কীটনাশক দিতে হবে। একটি বেগুন গাছ অনেক দিন ফল দেয়। ঢেড়স গাছ বেশী রোদ পড়ে এমন জায়গায় লাগাবেন।


 বেগুন,ঢেড়স,লাল শাক,পুইশাক,ধনেপাতা,ডাটা শাক এসব গাছের খুব যত্ন করতে হয় না।

বার। রসুন আর লবঙ্গ বেটে সে পানি গাছে স্পে করলে পোকা কম আসবে। মরিচ গাছে নেপথলিন বেধে দিন। পোকা কম আসবে। পাতা কুকড়ালে ভার্মিটেক কিংবা  এবোম কীটনাশক দিন। কুকড়ানো পাতা ফেলে দিন। মরিচ গাছে দশ দিন পর পর ডায়মেথট গ্রুপের  (যেমন টাফগর) কীটনাশক দিলে উপকার হবে। 


সব কিছু করছেন। কাজ হচ্ছে না। গাছের জায়গা বদল করেন। উঠিয়ে অনত্র লাগান।


শফিক,মিরপুর ১২,ঢাকা।


লেখক: দীর্ঘদিন যাবৎ ছাদ কৃষির সংঙ্গে জড়িত।

Last post

ড্রাগন ফলের পরিচয়

  উৎপত্তি ও ভৌগলিক বিস্তৃতিসহ ড্রাগন ফলের পরিচয়     " ড্রাগন ফল " বা ড্রাগন ফ্রুট অসমৃদ্ধ এবং বিশেষ রূপের ফল , য...