Thursday, December 30, 2021

কাগুচে লেবু গাছের পরিচর্যা

 


লেবু গাছের যত্ন।



লেবু গাছের যত্ন।

যারা চায়না-৩/ বারমাসি লেবু চাষ করছেন... এ সময় তাদের গাছ হয়ত ফুলে-ফলে ভরে আছে। বারমাসি জাতগুলোর এটিই হচ্ছে বৈশিষ্ট্য। সারা বছর লেবুতো হতেই থাকে... আবার বছরে ২ বার খুব বেশি পরিমান ফুল আসে- বর্ষা মৌসুমে আর শীত মৌসুমে।


বর্ষা মৌসুমে দেশি লেবুও হয়, তাই সে সময় লেবুর দাম খুব কম থাকে। তবে শীতকালীন সময়ে দেশি গাছে ফুল আসে না, তাই এ ফুলে যে লেবুগুলো হয়, তার দাম অনেক বেশি হয়। স্থান ভেদে প্রতিটি লেবু ১০-২০ টাকা পিস খুচরা বিক্রি হতে দেখা যায়।

তবে এ জাতগুলোতে ভালো ফলনের জন্য প্রথম শর্ত হচ্ছে পরিচর্যা। পর্যাপ্ত সার, সেচ এবং স্প্রে করলে তবেই বেশি ফলন আশা করা যায়।

বছরে ৩-৪ বার সার প্রয়োগ করা উচিৎ। আর শীত ও গ্রীষ্মকালে নিয়মিত সেচ দেয়া আবশ্যক।
যেহেতু শীতকালীন ফুলগুলো থেকে আসা লেবুর দাম সবচেয়ে বেশি হয়, তাই আমাদের উচিৎ এ মৌসুমকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া।

তাই শীতের শুরুতেই বিঘা প্রতি ২০ কেজী ফসফেট, ২০ কেজী পটাশ, ৫ কেজী ইউরিয়া, ৪-৫ কেজী জিপসাম, ১ কেজী বোরণ সার এবং বেশি পরিমান পঁচা গোবর সার প্রয়োগ করে সেচ দিয়ে দেয়া।
উপরে স্প্রে করার জন্য কীটনাষক হিসেবে এমামেকটিন বেনজয়েট/ এবামেকটিন রাখা যায়।
ছত্রাকনাষক হিসেবে জ্যাজ অথবা এন্ট্রাকল দেয়া যায় এবং হরমন হিসেবে লিটোসেন বা মিরাকুলান দেয়া যায়।
খেয়াল রাখতে হবে... লেবু গাছে কখনও কড়া স্প্রে করা যাবে না, তাই সিঙ্গেলভাবে স্প্রে করতে পারলে উত্তম হয়।
ফলের গুটি হয়ে গেলে মাটিতে জিংক সার দেয়া উত্তম হবে। এ সকল পরিচর্যা করতে পারলে আশা করি অভাবনীয় ফলন পাওয়া সম্ভব হবে।

Tuesday, December 28, 2021

বোরন সার প্রয়োগ পদ্ধতি



বোরন  সার


বোরন  সার

বোরন সার প্রয়োগ পদ্ধতি

বোরন একটি রাসানিক মৌল যার প্রতিক হচ্ছে B । বোরনের পারমানবিক ভর সংখ্যা ৫।বোরন প্রকৃতি গত ভাবে সংঘটিত একটি মৌল ।যা প্রকৃতিতে স্বাভাবিক ভাবে মিলে যায়। পৃথিবীর সবথেকে বড়ো বোরনের খনি তুরস্কে অবস্থিত।বোরন হলো একপ্রকার ধাতুকল্প যা পাথর এবং ধাতুর গায়ে অল্প পরিমানে পওয়া যায়।বোরন দেখতে রুপালী থেকে কালো এবং খুব শক্ত হয়ে থাকে। খুব অল্প মাত্রায় বিদুৎ পরিবাহি। কৃষিক্ষেত্রে বোরনের ব্যবহার আলোচনা করা হল।

যে মাটিতে অম্লবেশি সে মাটিতে বোরনরে ঘাটতি দেখাদিবে। আবার যে মাটিতে জৈব পদার্থ ১.৫%

 কম থাকে সেই মাটিতে বোরণের অভাব দেখাদিবে। বোরন সরাসরি মাটিতে প্রয়োগ করলে তা উদ্ভিদ গ্রহন করতে পারে না । জমির মাটি পরিক্ষা করে বোরণ ব্যবহার করাযেতে পারে। নিম্নে



বোরন  সার এর অভাব জনিত লক্ষন,প্রয়োগ ও মাত্র আলোচনা করা হলো।

 উৎপাদন : কমপক্ষে ২০% বোরন বিদ্যমান।

বোরনের অভাবজনিত লক্ষণ : পাতা খর্বকায় ও কোঁকড়ানো হয় এবং নেতিয়ে পড়ে।  কান্ড ও পাতার বোঁটা এবং ফল ফেটে যায়। শিকড়ের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। কান্ডের তগ্রকোস বা কচি কান্ডের বৃদ্ধি ব্যাহত হয় । পরাগায়ন, ফুল ও ফলের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। আলু ও বিভিন্ন ফলের উপর বিবর্ণ দাগ পড়ে। উদ্ভিদ বন্ধ্যাত্ব দেখা দেয় । বীজের সংখ্যা খুব কমে য়ায়।

প্রয়োগ পদ্ধিতি : মাটিতে এবং পাতায় স্প্রে দুইভাবেই প্রয়োগ করা যায়। সার /বালু/ছাই/মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে জমি তৈরির শেষ চাষে প্রয়োগ করতে হবে। ফসলে বোরনের অভাব দেখা  দিলে মাত্রানুযায়ী পানিতে মিশিয়ে শেষ বিকালে স্প্রে করতে হবে।

প্রয়োগ ক্ষেত্র : সকল প্রকারের ফসলে ব্যবহার করা যায়। ধান, গম, আলু, আম, ইক্ষু, বেগুন, পিয়াজ, মিষ্টি কুমড়া, শশা, পটল, করলা, চিচিংগা, ঝিংগা, ঢেঁড়স, বাধাকপি, ফুলকপি, মরিচ, পান, আনারস, কলা, তরমুজ, তুলা, চা, এবং ফুল জাতীয় ফসল যেমন-গাঁধা, গোলাপ, রজনীগন্ধা,জারবেরা ইত্যাদি ফুলগাছে বোরন ব্যবহার করলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যায় এছাড়া ডাল ও তেল জাতীয় দানাদার ফলের দানার গঠনে এবং ফলন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। আলুকে দাঁদ রোগ থেকে রক্ষা করে এবং ধানে চিটা হওয়া ও দাগ পড়া কমে যায়। আম, লিচু, কলা ইত্যাদি ফলের ফেটে যাওয়া রোধ করে।


প্রয়োগ মাত্রা : প্রতি লিটার পানিতে ১-১.৫ গ্রাম বোরন  মিশিয়ে স্প্রে করুন। ১৫ দিন অন্তর অন্তর দুই বার প্রয়োজনে ৩য় বার স্প্রে করুন।

ধন্যবাদ সকলকে

আমিন

কৃষি পরামর্শ Group

Sunday, December 26, 2021

ফুলকপির খাওয়ার উপকারীতা


ফুলকপির খাওয়ার উপকারীতা।


ছবিঃ নিজের ক্ষেতের

 ফুলকপির খাওয়ার উপকারীতা।

 শীতের মৌসুমে ফুলকপি খাবেন না, তা কি হয়? ফুলকপির যে মেলা গুণ! ফুলকপি শুধু স্বাদের জন্যই নয়, এতে থাকা সালফার সুস্বাস্থ্য ধরে রাখার জন্য উপকারী। যকৃৎ থেকে ক্ষতিকর বিষাক্ত উপাদান দূর করে এটি সুস্থ রাখতে পারে ফুলকপি। ফুলকপির বিশেষ কিছু গুণ আছে, যা সবার জেনে রাখা ভালো:

১. কোলস্টেরল কমায়: এতে প্রচুর ফাইবার আছে, যা শরীরে কোলস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

২. ওজন কমাতে: গবেষণায় দেখা গেছে, ফুলকপি মস্তিষ্ক ভালো রাখে, ওজন কমায় এবং সর্দি-কাশিসহ নানা রোগ প্রতিরোধ করে।

৩. হাড় ও দাঁত শক্ত করে: ফুলকপিতে রয়েছে দাঁত ও মাড়ির উপকারী ক্যালসিয়াম ও ফ্লোরাইড। এর ক্যালসিয়াম হাড় শক্ত করে।

৪. ক্যানসার প্রতিরোধ করে: মারাত্মক ক্যানসার প্রতিরোধ করতে পারে ফুলকপি। এতে আছে সালফোরাপেন, যা ক্যানসার কোষকে মেরে টিউমার বাড়তে দেয় না। স্তন ক্যানসার, কোলন ও মূত্রথলির ক্যানসারের জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়ার ক্ষমতাও আছে ফুলকপির।

৫. হৃদ্‌যন্ত্রের জন্য উপকারী: ফুলকপি হৃদ্‌যন্ত্রের জন্য ভালো। এতে যে সালফোরাপেন আছে, তা হৃদ্‌রোগের বিরুদ্ধে লড়তে পারে।

৬. রোগ প্রতিরোধ করে: ফুলকপিতে আছে ভিটামিন ‘বি’, ‘সি’ ও ‘কে’, যা এ সময়ের সর্দি, ঠান্ডা, কাশি জ্বর ভাব, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, গা-ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া ফুলকপির আরও সব প্রয়োজনীয় উপাদান রোগ প্রতিরোধেও অংশ নেয়।

৭. শক্তি জোগায়: এই সবজিতে আছে প্রচুর আয়রন। রক্ত তৈরিতে আয়রন রাখে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। গর্ভবতী মা ও অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম করা মানুষের জন্য ফুলকপি অত্যন্ত জরুরি।

৮. চুল ও ত্বকের জন্য উপকারী: কম ক্যালরিযুক্ত ও উচ্চমাত্রার আঁশসমৃদ্ধ ফুলকপি চুল ভালো রাখে। ত্বকের সংক্রমণও প্রতিরোধ করে।

৯. পরিপাকতন্ত্র ভালো রাখে: ফুলকপি পরিপাকতন্ত্রকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।

১০. দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়: চোখের যত্নে ফুলকপির কোনো তুলনা হয় না। ফুলকপিতে থাকা ভিটামিন ‘এ’ চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। চোখ সুস্থ রাখতে বেশি করে ফুলকপি খাওয়া উচিত।

ধন্যবাদ সকলকে


Friday, December 24, 2021

ফসল চাষ


ফসল চাষ

 এক বছরে একই জমিতে পাঁচ ফসল করে শেষ করলাম। 

পাঁচ ফসল  একই জমিতে  এক বছরে।

 পাঁচ ফসল  একই জমিতে  এক বছরে।

১|গত বছর ঠিক এই সময় আমি ২ বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছিলাম এবং মাঠের সেরা আলু হয়েছিল কিন্তু দাম ভালো পায়নি, তবুও ১৫ হাজার টাকা লাভ হয়েছিল। 

২| আলু তোলার পরপরই একই জমিতে গোল্ডেন ক্রাউন তরমুজ রোপণ করেছিলাম মাচা তৈরি করে, প্রচুর তরমুজ হয়েছিল কিন্তু  জাতটা ছিল খুব নরম, তাই ঢাকা পযন্ত নিয়ে যাওয়ার পর অর্ধেক তরমুজ ফেটে গিয়ে নষ্ট হয়ে যায়, তবুও ২০ হাজার টাকা লাভ হয়েছিল। 

৩| তরমুজ শেষ হওয়ার পরপরই একই জমিতে তরমুজের মাচায় দেশি শসা লাগিয়েছিলাম, প্রচুর শসা হয়েছিল, ১২ /১৩ টাকা কেজি বিক্রি করেছিলাম তবুও ৮০ হাজার টাকা লাভ হয়েছিল। 

৪| শসার শেষ হওয়ার পরপরই মাচা খুলে জমিতে ঘাস মরার ঔষধ দিয়ে কয়েকদিন রেখে দিলাম, তারপর ভালো করে চাষ দিয়ে ধনিয়াপাতা বুনলাম, জমিতে ঘাসের চাপ বেশি হয়ে গেল তাই নিড়ানি খরচ দিয়ে ধনিয়াপাতার চাষের মাঝ পথে অনেক টাকা খরচ হয়ে গেল, আমি ভাবলাম হয়তো টাকা উঠে আসবে না, সেসময় আমার ফুলকপির চারা রেডি ছিল ধনিয়াপাতার বয়স যখন ১৭ দিন তখন ধনিয়াপাতার মধ্যেই ফুলকপি লাগিয়ে দিলাম, কিছু দিন পরে সেই ধনিয়াপাতা বিক্রি করলাম ৩৭ টাকায়, আমার ১২ হাজার টাকা। 

৫| ধনিয়াপাতা তুলে দিয়ে কপির পরিচর্যা করতে করতে গত কয়েকদিন আগে বিক্রি করলাম ১ লক্ষ ১২ হাজার টাকায়, ৭৫ হাজার টাকা লাভ হলো ফুলকপিতে, আলহামদুলিল্লাহ। 

কিন্তু গ্রুপের যারা আমার কপি বলেছিল যে দাম ভালো পাওয়া যাবে, কেউ বলেছিল ২ পিচ বিক্রি করতে হবে, সেই বন্ধুরা আজ কোথায় আছেন?  

সব কৃষি বন্ধুদের বলবো যে কোন কিছুতে নিরাশ হবেন না, সঠিক পরিকল্পনা করে চাষ করুন লাভ হবেই একদিন।

আমি চিকিৎসা পেশায় আছি, রোগীদের সেবা দেওয়া আমার কাজ হলেও মাঝে মাঝে সময় দিয়ে দেখভাল করে ফসল ফলায়, কারণ আমি কৃষিকে ভালোবাসি।

ধন্যবাদ সবাইকে খলিলুর রহমান 





Sunday, December 19, 2021

আনার ফল

আনার ফল

আনার গাছের ফুল ঝরে পড়া ।

আনার গাছের ফুল ঝরে পড়া ।

অনেকেই আমাকে পশ্ন করেন আনার গাছের ফুল ঝরা নিয়ে আর গাছে ফল সেট হয় না
১ম কথা হচ্ছে আমরা গাছ লাগানোর কিছুদিনের মধ্যেই ফল চাই এটা ঠিক না
২ য় কথা হলো আনার গাছে ৯০% পুরুষ ফুল আসে প্রথমে পরে ১০% স্ত্রী ফুল আসে পুরুষ ফুলের সাথে তাই পুরুষ ফুল যা আসবে তা ঝরবেই বাকি ১০% থেকে ও ৫% ঝরে যাবে সর্বোপরি শেষ ৫% থেকে ফলে পরিনত হবে তাই এটা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই আপনি গাছে ফুল আসার সময় আধা চা চামিচ পটাশ সার টবের চার কিনারা দিয়ে দিন, এবং একটু কিটনাশক ও ছত্রাক নাশক স্প্রে করুন
আর মাসে এক বার টব ছোট হলে ১৫ দিন পর পর গাছে সুষম খাবার দিন
২০ লিটার বালতির জন্য ২ মোঠ ভার্মি কম্পোস্ট ২০ দানা টি এস পি বা ডিএপি,২০ দানা সমপরিমাণ পটাশ সার সরিষার খৈল পচা পানি মাসে একবার
বোরন স্প্রে করুন মাসে একবার লিটারে ২ গ্রাম হারে
ইমিডাক্লোরোপিট গ্রুপের কিটনাশক লিটারে ২০ ফোটা
ম্যানকোজেব বা কার্বোন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাক নাশক লিটারে আধা চা চামিচ
টবের সাইজ ছোট বড হলে খাবারের পরিমান কম বেশি হবে
পানি কম বেশি হলে ঝরতে পারে
ছত্রাকের আক্রমনের জন্য ঝরতে পারে
অনুখাদ্যের ঘাটতির জন্য ঝরতে পারে।




আর মাসে এক বার টব ছোট হলে ১৫ দিন পর পর গাছে সুষম খাবার দিন
২০ লিটার বালতির জন্য ২ মোঠ ভার্মি কম্পোস্ট ২০ দানা টি এস পি বা ডিএপি,২০ দানা সমপরিমাণ পটাশ সার সরিষার খৈল পচা পানি মাসে একবার
বোরন স্প্রে করুন মাসে একবার লিটারে ২ গ্রাম হারে
ইমিডাক্লোরোপিট গ্রুপের কিটনাশক লিটারে ২০ ফোটা
ম্যানকোজেব বা কার্বোন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাক নাশক লিটারে আধা চা চামিচ
(টবের সাইজ ছোট বড হলে খাবারের পরিমান কম বেশি হবে।
পানি কম বেশি হলে ঝরতে পারে
ছত্রাকের আক্রমনের জন্য ঝরতে পারে
অনুখাদ্যের ঘাটতির জন্য ঝরতে পারে

ধন্যবাদান্ত

ম্যাগনেসিয়াম সালফেট (MgS04) ব্যবহার ও উপকারিতা।


ম্যাগনেসিয়াম সালফেট (MgS04)

ম্যাগনেসিয়াম সালফেট (MgS04) 

ম্যাগনেসিয়াম মাটিতে ম্যাগনেসিয়াম  সালফেটে অভাব পুরুণ করতে ব্যবহার করা হয়।

রাসানিক বৈশিষ্ঠ : ম্যাগনেসিয়াম সালফেট (MgS04)  বর্ণহীন, তিক্ত,লবণক্ত।

সার ,সিমেন্ট, ঔষধ, টেক্সটাইল শিল্পে ব্যবহার হয়ে থাকে। নিম্নে কৃষিতে ব্যবহার হয় কি কারণে তা আলোচনা করা হল।

প্রয়োগক্ষেত্র : ম্যাগনেসিয়াম ও সালফারের অভাব পুরনের জন্য সব ধরনের ফসলেই প্রয়োগ করা যায়। বিশেষ করে ধান, আলু, ভুট্রা, টমেটো, সব ধরনের শাক-সবজি, পান, আখ, পাট, ডাল, গম, তৈলবীজ জাতীয় ফসলে ম্যাগনেসিয়াম সালফেট  অত্যান্ত কার্যকরী।


প্রয়োগ পদ্ধতি : বীজ বপন ও চারা রোপনের আগে বা পরে ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে। প্রয়োজনে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োগ মাত্রা কম বা বেশি করা যেতে পারে।

সতর্কতা : টিএসপি, এসএসপি বা ডিএমপি সারের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করা যাবে না।



আরো পড়ুন সারের কাজ কি ? সার চেনার উপায়


প্রয়োগক্ষেত্র ও মাত্রা : ধান, গম, আলু, পেঁয়াজ, তরমুজ, পটল, ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজর, মুলা, কলা, সীম, মটরশুটি, পান, ঢেঁড়স, কাকরোল, শসা, লাউ, কুমড়া ইত্যাদি ( ৩-৬ কেজি ৩৩ শতাংশে)

টমেটো, বেগুন, সরিষা, ভুট্রা বাদাম, ডাল, আদা, হলুদ ইত্যাদি ফসলে (৪-৮ কেজি ৩৩ শতাংশে)

আখ, তুলা, আনারস, কলা ইত্যাদি ফসলে (১২-২০ কেজি ৩৩ শতাংশে)

পেঁপে, লেবু, আম, কাঁঠাল, লিচু, কমলা, নারিকেল ইত্যাদি ফসলে ( ২০০-৩০০ কেজি ৩৩ শতাংশে)


ম্যাগনেসিয়াম ও সালফারের অভাবজনিত লক্ষণ সমূহ : দানা জাতীয় ফসল যেমন ধান, গম, ভুট্র জাতীয় ফসলের গাছ হলুদ বর্ণ ধারণ করে। গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ হয় এবং ফলন কমে যায়। শাকসবজির পাতার মধ্যশিরা বরাবর হলুদ বা লালচে বর্ণ ধারণ করে, পাতার কিনারা কুঁকড়ে যায় ও পাতা ঝরে পড়ে। গাছের মূলের বৃদ্ধি ব্যহত হয়। ফল অপরিপক্ক হয় এবং ঝরে পড়ে।


ম্যাগনেসিয়াম সালফেট-এর উপকারিতা :

গাছের শিকড় বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, পাতা কুঁকড়ে যাওয়া রোধ করে এবং পাতার  বর্ণ হলুদ  ও লালচে  হওয়া থেকে রক্ষা করে। ফুল, ফল, পাতা ঝরা বন্ধ করে।ফলন বৃদ্ধি করে ও ফসলের গুণমান নিশ্চিত করে।

আরো পড়ুন সারের কাজ কি ? সার চেনার উপায়



ধন্যবাদ সবাইকে

আমিন

কৃষি পরামর্শ Group

Sunday, December 12, 2021

ফেরোমন ফাঁদ স্থাপন ও ব্যবহার

বর্তমান ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার দিনে দিনে  বৃদ্ধি পাচ্ছে, কৃষক এবং সচেতন  সবজি উৎপাদনে যারা নিয়োজিত তার কীটনাশকের ব্যবহার কমতে এবং নিরাপদ সবজি উৎপাদনের জন্য ফেরোমন তাবিজ এর উপর ঝুকছে । অর্গানিক সবজি ও ফল উৎপাদনের জন্য ফেরোমন ফাদের ভুমিকা অপরিসীম। ছাদ কৃষিতে এর কদর বাড়ছে দিনে দিনে।


ফেরোমন ফাঁদ স্থাপন ও ব্যবহার

ফেরোমন ফাঁদ 

ফেরোমনঃ-ফেরোমন একটি প্রাচীন গ্রীক শব্দ phero বহন করা এবং হরমোন, প্রাচীন গ্রীক impetus হচ্ছে নিঃসরিত হওয়া রাসায়নিক বস্তু। যা একই প্রজাতির সদস্যদের মধ্যে একটি সামাজিক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। ফেরোমন হচ্ছে রাসায়নিক পদার্থ যা স্বতন্ত্র ভাবে শরীরের বাইরে ক্ষ্ররিত হয় এবং হরমোনের মতো আচরন করে, যারা এটি গ্রহণ করে তাদের উপরও এটি স্বতন্ত্র ভাবে প্রভাব ফেলে। বিভিন্ন ধরনের হরমোন যেমন এলারম ফেরোমন, ফুড ট্রেইল ফেরোমন, সেক্স ফেরোমন ইত্যাদি আছে। এছাড়া আরো অনেক ফেরোমন আছে যারা শরীরে ও স্বভাবে প্রভাব ফেলে।ফেরোমন এককোষী আদিকোষ থেকে জটিল বহুকোষী প্রকৃত কোষে ব্যাবহৃত হয়। পতংগে ফেরোমনের ব্যাবহার বেশ ভালোভাবে গবেষণা থেকে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে অধিকন্তু কিছু ভাটিব্রাটা, উদ্ভিদ এবং সিলিয়াট ফেরোমন ব্যাবহার করে।

ফেরোমন একটি পোটেম্যান্টিউ শব্দ।১৯৫৯ সালে পিটার কালসন এবং মাট্রিন লুসচার গ্রীক শব্দ ফেরো(আমি বহন করি) হরমোন Stimulating কে সমন্বয় করে এই নাম রাখেন।

ফেরোমন হলো একধরনের পদার্থ যা বিভিন্ন প্রাণী এবং কীটপতঙ্গ তাদের শরীর থেকে নিগৃত ককরার মাধ্যমে ঐ প্রজাতির অন্যান্য সদস্যদের আচার -আচরনকে নিয়ন্ত্রণ করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ফেরোমন ব্যাবস্থপনা প্রানীদের তুলনায় কীটপতঙ্গে অনেক সহজ। কীটপতঙ্গ ফেরোমন ব্যাবস্থপনার মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তথ্য আদান-প্রদান এবং আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে।
ফেরোমনের প্রধান শ্রেণি সমুহঃ-
#১.Aggregation (সমাহার) ---Alarm(বিপদ সংকেত)
#২.Epideictic (নিদের্শক)Territorial(এলাকা নিধারক)
#৩.Trail Marking ( চিন্হ রেখা)-Sex(যৌন প্রজনন).
সেক্স ফেরোমন কি?
সেক্স ফেরোমন হলো একটি নিদিষ্ট গন্ধযুক্ত জৈব রাসায়নিক পদার্থ যা স্ত্রী পোকার শরীর হতে নিঃসৃত হয় এবং সেই গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে পুরুষ পোকা স্ত্রী পোকার নিকটে চলে আসে ও তাদের যৌন মিলন হয়। বতমানে এই নিদিষ্ট গন্ধযুক্ত জৈব রাসায়নিক পদার্থ কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা হচ্ছে যার দ্বারা সৃষ্ট টোপ ব্যাবহার করে পুরুষ পোকাকে আকৃষ্ট করে বিভিন্ন ধরনের ফাঁদের সাহায্যে মেরে ফেলা হয়।ফলশ্রুতিতে পুরুষ পোকার অনুপস্থিতির কারনে স্ত্রী পোকার যৌন মিলন সম্পন্ন হয়না বিধায় তাদের বংশবৃদ্ধি ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়।
বায়ো- পেস্টিসাইড বা জৈব বালাইনাশক হলো বিভিন্ন বালাই দমনের এমন একটি মাধ্যম যেটি বিভিন্ন অনুজীব এবং জৈব উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত।
জৈব বালাইনাশক তিনটি প্রধান শ্রেণিতে বিভক্ত--
#১. জৈব রাসায়নিক বালাইনাশক
#২.অনুজীব জৈব বালাইনাশক
#৩.পি,আই,পি(প্লান্ট ইনকপোরেটেড প্রটেক্টযান্টস)

জৈব রাসায়নিক বালাইনাশকঃ-
জৈব রাসায়নিক বালাইনাশক হলো প্রকৃতিগতভাবে উদ্ভুত উপাদান অথবা রাসায়নিক উপাদান যা গঠনগতভাবে জৈব উপাদানের সম্পুর্ন অনুরুপ। সাধারণত জৈব রাসায়নিক জৈব বালাইনাশক অবিষাক্ত পদ্ধতিতে /ভাবে কাজ করে যা বালাই সমুহের গঠন ও বদ্ধি, প্রজনন ক্ষমতা এবং বাস্তুসস্থান প্রভাবিত করে।এই ধরনের জৈব বালাইনাশকের উদ্ভিদের গঠন ও বৃদ্ধিতেও উপকারী ভুমিকা রয়েছে।জৈব রাসায়নিক জৈব বালাইনাশকে বেশ কয়েকটি শ্রেনিতে ভাগ করা যায়।

যথাঃ
১.সেমি কেমিক্যাল
ক.ফেরোমন
খ.এলিলোকেমিক্যাল
#এলোমন
#কাইরোমন
#সিনোমন
২.হরমোন
৩.ন্যাচারাল প্লান্ট রেগুলেটর এবং ইনসেক্ট গ্রোথ রেগুলেটর
৪.এনজাইম
৫.বোটানিক্যাল
অনুজীব জৈব বালাইনাশকঃ
বিভিন্ন ধরনের স্পোর বা অনুজীব উতপাদনকারী অনুজীব হতে উদ্ভুত উপাদানই অনুজীব জৈব বালাইনাশক হিসাবে ব্যাবহৃত হয়। অনুজীব জৈব বালাইনাশককে পাচ ধরনের শ্রেনীতে ভাগ করা যায়।যথাঃ
১.ব্যাকটেরিয়াজাত.
২.ছত্রাকজাত.
৩.প্রোটোজোয়াজাত.
৪.ভাইরাসজাত.
৩.পি.আই.পিঃ
পি. আই.পি জেনেটিক উপাদান যা নিদিষ্ট প্রজাতির মধ্যে জেনেটিক উপাদান হিসাবে প্রবেশ করানো হয় তবে এর ব্যাবহার বিতকিত।


আজ আপনাদের সাথে ফেরমন তাবিজ বা লিওর সম্পর্কে কিছুু আলোচনা করবো।



 তাবিজ বা লিওর : কুমড়া জাতীয় ফসলের মাছি পোকার ফেরোমন টোপ।

ফসল : মিষ্টি কুমড়া, লাউ, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, তরমুজ, কাকরোল, শশা, করলা, পটল ইত্যাদি।

বর্ণনা : ফেরোমন এক ধরনের প্রাকৃতিক জৈব রাসায়নিক পদার্থ যা কোন প্রজাতির পোকা কর্তৃক নিঃসৃত হয়। একটি প্রজাতির পুরুষ পোকাকে প্রজনন কার্যে আকৃষ্ট করে।

ফেরোমন লিওর কি? ফেরোমন যখন কোন প্লাস্টিক ভায়াল বা প্লাস্টিক ক্লিপ বা রাবার সেপ্টায় দেওয়া হয় তখন উক্ত ডিভাইজটি ফেরোমন টোপ বা লিওর।

উপকরণ : ফেরোমন টোপ, প্লস্টিক বৈয়ম, তার ডিটারজেন্ট পাউডার পানি ও বাঁশের খুঁটি।

ফেরোমন ফাঁদ স্থাপন ও পদ্ধতি : প্লাস্টিক বৈয়মের ত্রিকোন অংশের মাঝ বরাবর, তার দিয়ে ফেরোমন টোপটি ঝুলিয়ে দিতে হবে। ফুল ও ফল যে উচ্চতায় থাকে ঠিক সেই উচ্চতায় ফেরোমন ফাঁদটি দুটি খুঁটির সাহায্যে বেঁধে দিতে হবে। বৈয়ামের ভিতরে ডিটারজেন্ট পাউডার মিশ্রিত পািিন দিয়ে কর্তিত অংশ ১ সেস.মি. নিচ বরাবর ভরে দিতে হবে ।

সংরক্ষণ : শুস্ক ও ঠান্ডা স্থানে সংরক্ষণ করুন।

প্রয়োগ বিধি : জমির আইলে থেকে ১৬ ফিট ভিতরের দিকে প্রতি ৩২ ফুট পর পর বর্গাকারে ফাঁদ স্থাপন করতে হবে। প্রতি ২ শতাংশ জমির জন্য ১টি ফাঁদ বা প্রতি বিঘা জমিতে ১২-১৫ টি ফাঁদ ব্যবহার করতে হবে। হেক্টর প্রতি ৯০-১০০টি।

সাবধানতা : টোপের গায়ে যেন পানি না লাগে প্রতি ৫-৭ দিন অন্তর বৈয়ামের ডিটারজেন্ট ও পোকা মিশ্রিত পানি পরিববর্তন করে নতুন ডিটারজেন্ট মিশ্রিত দিতে হবে।

রাসায়নিক কিটনাশক ব্যবহারে পূূর্ণাঙ্গ মাছি পোকা দমন করা সম্ভব হয় না। কারণ জমিতে কিটনাশক প্রয়োগ করা হলে মাছি পোকা অন্যত্র চলে যায়। পরবর্তীতে আবার জমিতে ফিরে এসে ফসলে আক্রমণ করে। একমাত্র ফেরোমন টোপ ব্যবহারে পূর্ণাঙ্গ মাছি পোকা বংশ বিস্তার ও দমন সম্ভব।

পূূর্ণাঙ্গ এই মাছি পোকায় কুমড়া জাতীয় ফসলের জমিতে মাছি পোকার বিস্তার ঘটায় এবং সবজি ফসলের ভয়াবহ ক্ষতি সাধন করে।

ধন্যবাদ সকলকে



জৈব সার তৈরি করার নিয়ম

 সমস্ত প্রশংসাই মহান আল্লাহর । এখানে বিনা পয়সায় জৈব সার তৈরির পদ্ধতি দেওয়া হলো ।

জৈব সার তৈয়ারির পদ্ধতি দেওয়া হলো

জৈব সার তৈরি করার নিয়ম

আপনার বাগান বড় ও ছোট হতে পারে । সেই অনুপাতে ফুল ড্রাম ডাকনা সহ কিনে নিবেন । বাগান বড় হলে ১২০ লিটারের ছোট হলে ৬০ লিটারের খালি ড্রাম ছিদ্র মুক্ত কিনে নিবেন । আমাদের রান্না ঘর হতে পারে জৈব সারের উৎস । এখন আপনার বাসায় রান্না ঘরের সব্জির কাটা কুটি ও খোসা ১ টি ঢাকনা যুক্ত ড্রামে ফেলতে থাকুন । এখানে ও পিয়াজ রসুনের ও পেপের খোসা দিবেন না এইটা মনে রাখবেন এই গুলি সহজে পচে না । ড্রামটি ভরে গেলে পানি দিতে হবে সাথে ১০০ গ্রাম ইউরিয়া দিয়ে দিবেন এত খুব সহসাই সব পচে যাবে । যদি দেখেন ড্রামে কোন পোকা হয়েছে তা হলে ৫০ গ্রাম পটাশ সার দিয়ে দিতে হবে । ইউরিয়ায় পচানো সাহায্য করবে পটাশ সার পোকা মুক্ত কাজ করবে । ড্রামের মুখ বন্ধ করে দিন ১০ দিন পরে মুখ খুলে দেখে নিবেন সঠিক ভাবে পচেছে কিনা । পচে গেলে ভালো ভাবে নাড়ুন নেড়ে নিয়ে এখান থেকে শুধু পানি নিবেন । স্টিলের নেট দিয়ে ছেকে শুধু পানি নিবেন । এখানে পানি কমে গেলে অল্প পানি দিয়ে নিবেন ।এক মগ পানির সাথে ৫ মগ পানি দিয়ে গাছের গোড়ায় দিতে হবে । এই পানিতে খড় কুটা যা হবে পুড়িয়ে ফেলুন ছাই হবে ছাই বেগুন গাছের জন্য ভাল জৈব সার । আপনার কস্টেই আপনার বাগান সৃস্টি হবে সবুজের ভুবন ।




সুপার ফাস্ট সার খৈল ও গোবর পচানো পানি ?
খৈল পচা একটি ভাল মানের জৈব সার । কি ভাবে তৈরি করবেন এই সার । যে কোন ঢাকনা যুক্ত পাত্র নিন তাতে ১কেজি খৈল দিয়ে ১৪ লিটার পানি দিয়ে নিবেন । সাথে শুকনা গোবর ২ কেজি মগের এক মগ দিতে হবে। এবার ড্রামের মুখ ভালো ভাবে বন্ধ করে দিন । ১০ দিন পরে লাঠি দিয়ে নাড়তে হবে ড্রামটি এয়ার টাইট হলে গন্ধ হবে না । যদি মনে করেন বেশী ঘন হয়ে গেছে তা হলে পরিমান মতো পানি দিয়ে দিবেন । ১৫ দিন পড়ে ব্যাবহারের উপযোগি হয়ে যাবে । সেই সাথে লক্ষ রাখবেন পোকা হলে এক মোঠ পটাশ সার দিয়ে দিবেন পোকা মরে যাবে । এখান থেকে ১ মগ খৈলের পানির নিবেন । সাথে আরো ১০ মগ ভাল পানি দিয়ে নিবেন । খুব পাতলা করে গাছের চার দিকে চক্র আকারে দিতে হবে । এই জৈব সার টি মাসে ২ বার দিতে পারেন । মনে রাখবেন ১মগ খৈল পাচানো পানি জন্য আরো ১০ মগ ভালো পানির কম দিতে পারবেন না । পাতলা হলে অসুবধা নেই ঘন হলে গাছ মরে যাবে । পালং শাক ও লাল শাকে দিতে হবে ১ মগের খেল পচানো পানির সাথে ১৫ মগ ভালো পানি এই ভাবে লাউ গাছে ও দিতে পারবেন । বৃষ্টির কারনে ড্রামে থাকা সারের ক্ষমতা কমে গেছে তাই এই জৈব তরল সার ব্যবহার করুন ।

অন্য সার বা রাসায়নিক সার গাছের রং গাঢ় সবুজ থাকলে দিতে হবে না । কিছু কিছু সময় পরিমিত রাসায়নিক সার দিতে হবে গাছে ফুল করার আগে আগে ।পাতার সাইট লাল হলে পটাশ সার ১৮ লিটার পানিতে দুই মোট ভিজিয়ে চক্র আকারে দিতে হবে । ডেপ সার ব্যাবহার করলে অন্য সার তেমন লাগে না । ফুল কলি ঝরে গেলে বোরন প্রতি গাছের চার দিকে এক চিমটি পরিমান দিতে হবে মাসে ২ বার । মনে রাখবেন শাক-সবজি, ফুলের জন্য ছোট খাট টব বা পানির বোতল হলে ও চলে । কিছু কিছু গাছ যেমন মরিচ গাছ সহ লতা জাতিয় ফুল সব কিছু ৫ লিটার পানির বোতলে লাগাতে পারেন । কিন্তু ফলের ক্ষেত্রে পাত্র/ড্রাম যত বড় হয় তত ভালো ।





এর বাহিরে জানতে চাইলে আমার ইউটিউবের চ্যানলটি ভিজিট করুন করতে লিখুন alamgir sikder rooftop garden

ধন্যবাদ

Saturday, December 11, 2021

জিংক সালফেট (মনোহাইড্রেট)


জিংক সালফেট (মনোহাইড্রেট) প্রয়োগক্ষেত্র ও বৈশিষ্ট্য এবং অভাবজনিত লক্ষণ।


জিংক সালফেট (মনোহাইড্রেট) প্রয়োগক্ষেত্র ও বৈশিষ্ট্য এবং অভাবজনিত লক্ষণ।

জিংক সালফেট (মনোহাইড্রেট)


জিংক সালফেট (মনোহাইড্রেট)
জিংক : ৩৬% ও সালফার : ১৭.৫%।

ফসলের জিংক বা দস্তার অভাবজনিত লক্ষণ:
*গাছের কচি পাতার গোড়া ও মধ্য শিরা সাদা হয়ে যায়।
*ধান, গম, ভুট্রার জমিতে গাছের বৃদ্ধি অসমান হয়। ফলে চারা কোথাও ছোট আবার কোথাও বড় দেখা যায়। এতে ফসল আগে পরে পাকে বা পাকতে দেরি হয় এবং ফলন কম হয়।
*পুরনো পাতায় মরিচা পরার মত ছোট ছোট দাগ দেখা যায়, যা দ্র্রুত বাদামী রং ধারণ করে।



* জিংকের বৈশিষ্ট্য:
* জিংক ব্যবহারে গাছে জিংক সালফারের ঘাটতি কম হয় এতে গাছের রং দ্রুত সবুজ হয়, গাছের বৃদ্ধি স্বাভাবিক হয়। এবং ফলন বাড়ে।
* জিংক গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং সঠিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
* জিংক ব্যবহারে দানা জাতীয় শস্য অধিক পুষ্ট হয় এবং ফলন বেশি হয়।

প্রয়োগক্ষেত্র : ধান, গম, ভুট্রা, আখ, আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেমটো, বেগুন, মরিচ, কুমড়া, শসা, পটল, করলা, চিচিংগা, ঢেড়শ, পান, আনারস,কলা, তরমুজ, তুলা, চা ইত্যাদি ফসলে জিংক ব্যবহার করলে আশানুরুপ ফলন পাওয়া যায়।

অনুমোদিত মাত্রা : একর প্রতি ৩ কেজি।
প্রয়োগ পদ্ধতি : জমি তৈরীর শেষ চাষে অনুমোদিত মাত্রায় জিংক ছিটিয়ে প্রয়োগ করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। এছাড়া ফসলের শারীরিক বৃদ্ধির সময় জিংকের অভাবে লক্ষণ দেখা দিলে গাছের মাটির সঙ্গে ভলোভাবে মিশিয়ে দিন।

সাবধানতা :
* জিংক কখনো টিএসপি, এসএসপি বা ডিএপি সারের সঙ্গে একত্রে মিশিয়ে প্রয়োগ করবেন না।
*মানুষ ও পশু খাদ্য থেকে দূরে নিরাপদ স্থানে রাখুন।
*ব্যবহারের সময় ধুমপান, পানীয় ও খাদ্য গ্রহণ করবেন না।
*ব্যবহারের পর হাত, মুখ ও কাপড়-চোপড় ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।

সংরক্ষণ :
বাতাসের জলীয় অংশে সংস্পর্শে এসে জিংক সহজেই ভিজে যায়। সুতরাং জমিতে ব্যবহারের কিছু আগে প্যাকেট খুলুন এবং অব্যবহৃত সার ভালোভাবে বন্ধ করে শুকনো ও ছায়াযুক্ত স্থানে রাখুন।



ধন্যবাদ সকলকে

আমিন

কৃষি পরামর্শ Group

Thursday, December 9, 2021

রবি ১ পাট বা বিজেআরআই পাট

জিনোম ভিত্তিক গভেষণায় উদ্ভাবতি পাটের নতুন জাত  (রবি-১) বা বিজেআরআই তোষা পাট-৮ 



১.  ভুমিকাঃ 
বর্তমানে চাষকৃত সর্বোচ্চ ফলনশীল পাট জাতের চাইতে প্রায় ২০% বেশী ফলনশীল  (‘রবি-১’) নামে পরিচিতি লাভ করা জিনোম ভিত্তিক গভেষণায় উদ্ভাবতি তোষা পাটের লাইনটি জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক ২০১৯ সালে জাত হিসেবে অবমুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ পাট গভেষণা ইনস্টটিউিট এ বাস্তবায়নাধীন পাট বিষয়ক মৌলিক ও ফলিত গবেষণা প্রকল্পের বিজ্ঞানীগণ এর উদ্ভাবক।  বিভিন্ন পরীক্ষণের  বাংলাদেশের প্রায় সকল এলাকায় সেনাপতি মার্কা ‘রবি-১’ বা বিজেআরআই তোষা পাট-৮ জাতটি চাষ উপযোগী বলে প্রমাণিত হয়েছে।

(রবি-১) বা বিজেআরআই তোষা পাট-৮




২.  রবি-১ এর বিশেষ বশৈষ্ট্যি সমূহ :
(ক) স্বাভাবিক গড় উচ্চতা প্রচলিত জাত অপেক্ষা ৩০-৩৫ সেন্টিমিটার বেশী;
(খ) গাছের গোঁড়া এবং আগার ব্যাসরে র্পাথক্য অপেক্ষাকৃত কম অর্থাৎ অধিকতর সলিন্ড্রিক্যিাল
(গ) গাছের ছালে ফাইবার বান্ডেলের ঘনত্ব বেশী;
(ঘ) আগাম বপন উপযোগী (মার্চ - এপ্রিল);
(ঙ) প্রচলিত জাতসমূহ হতে উন্নততর আঁশ বিশিষ্ট (চিকন, অধিকতর উজ্জ্বল এবং শক্ত)।

৩. শনাক্তকরণ বশৈষ্ট্যিঃ
(ক) স্থায়ী লাল বর্ণের উপপত্র;
(খ) পাতা উজ্জ্বল ও চকচকে।

৪.  আবাদ মৌসুম ও ভ‚মির বশৈষ্ট্যিঃ
জিনোম ভিত্তিক গভেষণায় উদ্ভাবতি পাটের নতুন জাত  (রবি-১) বা বিজেআরআই তোষা পাট-৮

(ক) মধ্য ফাল্গুন (মার্চ) হতে মধ্য বৈশাখ (এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ) পর্যন্ত বপনযোগ্য তবে মার্চের শেষ থেকে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ বীজ বপনের সর্বাধিক উপযোগী সময়; 
(খ) অপেক্ষাকৃত উঁচু, জলাবদ্ধতাহীন দোঁয়াশ এবং বেলে-দোঁয়াশ মাটি ‘রবি-১’ চাষের জন্য উপযোগী।
(গ) এ জাতটি বোর ধান কাটার পর বপন করে জমিকে সহজেই ৩-ফসলী শস্য ক্রমের আওতায় আনা যায়।

৫.  গুনগত মানসম্পন্ন আঁশ উৎপাদন ঃ
রবি ১ পাট বা বিজেআরআই পাট  উৎপাদনের কলা -কৌশল ।

(ক) অধিক ফলন ও গুনগত মানসম্পন্ন আঁশ পাওয়ার জন্য নির্ধারিত সময়ে বপনকৃত পাট গাছ ১১০-১২০ দিনে কাটা উত্তম। তবে প্রয়োজনে এ জাত ১০০ দিনেও কর্তন করা যাবে। সে ক্ষেত্রে ফলন সামান্য কম হলেও এতে আঁশ সোনালী রঙ ধারণ করে এবং নরম থাকে যা বিভিন্ন রকমের উন্নত মানের পাট পন্য তৈরিতে উপযোগী বলে বিবেচিত হয়েছে।
(খ) পাট গাছ কাটার পর ১০-১২ টি গাছ একত্রে আঁটি বেধে জমিতে ৩-৪ দিন খাড়া রাখার পর, পাতা ঝরিয়ে পানিতে জাঁক দেয়া শ্রেয়। জাঁক খুব পুরু না করে খড় বা কচুরীপানা দিয়ে ঢেকে দেয়া ভাল। সাধারনত: ১৫-১৮ দিনের মধ্যইে জাঁক সম্পন্ন হয়ে যায় এবং আঁশ ছাড়িয়ে রোদ্রে শুকাতে হয়। ধোয়া আঁশ আড়ে শুকানো উচিত। মাটিতে শুকালে আঁশের মান খারাপ হয়ে যায়।
(গ) এছাড়া পানি স্বল্প এলাকায় আঁশ ছড়ানোর জন্য রিবন রেটিং পদ্ধতওি অবলম্বন করা যেতে পারে।



ভারতীয় জাত জেআরও-৫২৪ ও দেশীয় জাত বিজেআরআই  রবি-১ এর  মধ্যে র্পাথক্য  :

ভারতীয় জাত জেআরও-৫২৪
জেআরও-৫২৪ জাতটির বয়স অনেক বেশি
জেআরও-৫২৪ জাতটির রোগ বলাই বেশি
জেআরও-৫২৪ জাতটির ফলন রবি-১ অপেক্ষা কম
জেআরও-৫২৪ জাতটির ৭০-৮০ দিন পর হতে গাছ মরা শুরু হয় যার ফলে ফলন কম হয়।
জেআরও-৫২৪ জাতটির বিঘা প্রতি বীজ বপন প্রায় 
১ কেজি (অঙ্কুরোধ ) ক্ষমতা কম।

বাংলাদেশীয় জাত বিজেআরআই রবি-১
রবি-১ জাতের বয়স কম
রবি-১ জাতটির রোগ বলাই সহনশীল
রবি-১ জাতটির ফলন অনেক বেশী
রবি-১ জাতটির গাছ সহজে মারা যায় না যার ফলে ফলন অধিকতর বেশী হয়।
রবি-১ জাতটির বিঘা প্রতি বীজ বোপন প্রায় ৫০০ গ্রাম (অঙ্কুরোদম) ক্ষমতা বেশি। 

ধন্যবাদ সকলকে

আমিন

কৃষি পরামর্শ Group






জিপসাম সার এর প্রয়োজনীয়তা ও ব্যবহার



জিপসাম সার  এর প্রয়োজনীয়তা ও ব্যবহার।

জিপসাম সার


উৎপাদন : ক্যালসিয়াম ২০% ও সালফার ১৬% বিদ্যামান।
ফসল ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত লক্ষণ : গাছের অগ্রভাগের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়, গাছ দূর্বল ও বামণাকৃতির হয়, পাতার কিনারা ও শিরা হলুদ বর্ণ ধারণ করে এবং কচি পাতা কুঁকড়ে যায়, ফুল ও ফলের র্কুড়ি অসময়ে ঝরে যায়।


ফসলে সালফারের অভাবজনিত লক্ষণ : কচি পাতা হলদে-ফ্যাকাসে বিবর্ণ রং ধারণ করে এবং ধীরে ধীরে পুরাতন পাতাও হলদে হয়ে যায়। গাছের বৃদ্ধি ও কুশির সংখ্যা কমে যায়। গাছ বেঁটে হয়ে যায় ও পাতার পচন ধরে। ফসল পরিপক্ক হতে দেরি এবং ফলন কমে যায়। শস্যের গুণগত মান লোপ পায়।


জিপসাম সার এর প্রয়োজনীয়তা : ক্যালসিয়াম ও সালফারের অভাবে ২৫% পর্যন্ত ফলন কম হতে পারে। জিপসাম ফপসলের সঠিক বৃদ্ধিতে সহয়তা করে। গাছের পাতা সবুজ করে, শিকড় বৃদ্ধি করে ও কুশির সংখ্যা বাড়ায়। ফসলের কোষ গঠনে সহায়তা করে। গছের নাইট্রোজেন গ্রহণে সহায়তা করে। সঠিক সময়ে ফসল পরিপক্ক হতে সহায়তা করে। তৈল জাতীয় ফসলে তেল উৎপাদনে সহায়তা করে। শস্যের গুণগত মান বৃদ্ধি করে।


জিপসাম সার প্রয়োগক্ষেত্র : আম, আলু, ধান, গম, ভুট্রা সহ সকল তৈল জাতীয় ফসল, ডাল জাতীয় ফসল, শীতকালীন ও গ্রীস্মকালিন শাক -সবজি, পান, সকল প্রকার ফুল ও ফলে সালফার ও ক্যালসিয়াম অভার পূরণের জন্য এবং আশানুরূপ ফলন পেতে নির্ধারিত মাত্রায় জিপসাম ব্যাবহার করতে হবে।


ব্যবহারবিধি : জমি তৈরির শেষ চাষে ছিটিয়ে প্রয়োগ করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। ফসলে ক্যালসিয়াম ও সালফারের অভার দেখা দিলে মাত্রানুযায়ী ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।

ধন্যবাদ সকলকে

আমিন

কৃষি পরামর্শ Group




 

Last post

ড্রাগন ফলের পরিচয়

  উৎপত্তি ও ভৌগলিক বিস্তৃতিসহ ড্রাগন ফলের পরিচয়     " ড্রাগন ফল " বা ড্রাগন ফ্রুট অসমৃদ্ধ এবং বিশেষ রূপের ফল , য...