ছবি: কিনোয়া
কিনোয়া অনেক ধরনের তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ৩ প্রকার কিনোয়া ব্যাখ্যা করা হলো-
১। লাল কিনোয়া
২। সাদা কিনোয়া
৩। কালো কিনোয়া
১। লাল কিনোয়া: কিনোয়ার মধ্যে
লাল কিনোয়াটি খুবই স্বাস্থ্য সম্মত। এই লাল কিনোয়া মূলত স্যালাড তৈরি বা যে কোন
স্মু-দিতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
২। সাদা কিনোয়া: সাদা কিনোয়া
এক ধরনের দানাদার শস্য। সাদা কিনোয়া ভাতের মতো খাওয়া যায়।
৩। কালো কিনোয়া: এর বীজ দেখতে
কালো এবং হালকা বাদামী। এর স্বাদ হালকা এবং মিষ্টি। রান্না করার পরও এর রং কালো
থাকে।
কিনোয়ার পুষ্টি: কিনোয়ার মধ্যে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানগুলি হলো-
মোট কার্বোহাইড্রেট ৩% ডিভি
ভিটামিন-ই ২১% ডিভি
ভিটামিন বি স্ক্রি ৪১% ডিভি
আয়রণ ৪৩%
ফসফরাস ৭৮%
পটাসিয়াম ২%
থায়ামিন ৪১%
ক্যালোরি ২২২ কে সি এল
ফোলেট ৭৮%
তামা ৫০%
ক্যালসিয়াম ৮%
প্যানটোথেনিক এসিড ১৩ শতাংশ
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কিনোয়ার ভূমিকা: কিনোয়ার বিভিন্ন উদ্ভিদজ্য এনজাইম ও ডায়াবেটিস কমিয়ে আনতে পারে।
ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে কিনোয়ার ভূমিকা অপরিসীম। কিনোয়া ওজন নিয়ন্ত্রণে খুবই উপকারী
হিসাবে কাজ করে। মানব শরীরের অন্যান্য রোগ ব্যাধি থেকে কিনোয়া যথেষ্ট পরিমান
ভুমিকা পালন করে থাকে। বিভিন্ন পুষ্টিবিদরা গবেষনা করেছেন যে, বিভিন্ন উদ্ভিদজ্য
এ্যানজাইমো ডায়াবেটিস কমিয়ে আনতে পারে এই কিনোয়া।
প্রোটিন জাতীয় খাদ্য: কিনোয়া একটি
উচ্চমানের সম্পুর্ণ আমিষ জাতীয় খাদ্য। বিশেষ করে ছোট শিশুদের প্রোটিনের অভাব দূর
করতে কিনোয়া অনেক কার্যকরী। কিনোয়া খেলে যকৃতের উদ্দিপনায় বেশি বেশি পৃত্তরস তৈরি
হয়। এর অন্যতম উপাদান হচ্ছে কোলস্টেরল। মানুষের রক্তে যে খারাপ কোলস্টেরল বা
এলডিএল অনেক কমে যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ মনে করেন কিনোয়া খেলে উচ্চ রক্ত চাপ বা রক্তের কোলস্টেরল হৃদ
রোগের পরিমাণ কমে যেতে পারে। এক কাপ কিনোয়াতে আছে দৈনিক যে যে চাহিদা তা হলো:
1. Manganese 58%
2. Magnesium 89%
3. Potassium 09%
4. Filet 19%
5. Iron 15%
কিনোয়া কিন্তু একধরণের Phytonutrients ভরপুর। এতে আছে Quercetin & Kaempferol নামের এই দুইধরণের উপকারী Antioxidents Or Flavonoids. বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য গবেষনা পত্রে প্রমাণ মিলিয়ে এই Phytonutrients দুটি খুবই কার্যকর। এদের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করার ক্ষমতা
কম নয়। তাই মহামারী এই ভয়াবহতার সময়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে শক্তিশালী ইমোজো
সিস্টেম করতে কিনোয়া ভাল গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করতে পারে বলে আশাবাদী।
ত্বকের সুরক্ষায় কিনোয়ার ভূমিকা: কিনোয়ার মধ্যে থাকা ভিটামিন-বি ত্বক থেকে বয়সের দাগ কম করতে এবং মেলানিন
নিষ্কাশন কম করে ত্বককে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। কিনোয়ার মধ্যে থাকা ভিটামিন
ত্বকের বার্ধক্যজনিত সমস্যা দূর করে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে যাদের মুখে অতিরিক্ত
বয়সের ছাপ বা রেখা দেখা যায়, তা তাদের ত্বককে সুন্দর করতে সহায়তা করে। কিনোয়ার
মধ্যে থাকা এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানগুলি ত্বকের কোঁকড়ানো ভাব কমাতে সহায়তা করে।
ভিটামিন-বি-২ এর অন্যতম উপাদান রাইবোফ্ল্যাভিন ত্বকের উন্নতি করে এবং ব্রণ
উপাদানকারী সিবাম কে নিয়ন্ত্রণ করে।
কিনোয়ার ব্যবহার: কিনোয়া মূলত
বার্লি চাল এর মতো রান্না করা যায়। এর পাশাপাশি কিনোয়ার আটা দিয়ে রুটি, বিস্কুট,
পাস্তা, নুডুলস বিভিন্ন রকম জিনিস তৈরি করা হয়। কিনোয়ার অনেক জাত আছে। তবে
বাণিজ্যিকভাবে লাল, সাদা ও কালো বেশি ব্যবহৃত হয়। কিনোয়াতে দুর্দান্ত স্বাদ আছে,
যা অন্য খাদ্যকে হার মানায়। এছাড়া দুধে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে এই কিনোয়া। কিনোয়া
রান্না করার আগে অনেক ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে কারণ এটিকে সঠিকভাবে ধুলে কীটনাশকের
প্রভাব কমে যাবে। তাহলে স্বাস্থ্যসম্মত খাওয়ার উপযোগী হবে। অন্যান্য অনেক সুপার
ফুডের চাইতে কিনেয়া আরেকটি কারণে অন্যান্য। কিনোয়া বেশী পানিতে ২০ মিনিট রান্না
করে নিলে কিনোয়া সুন্দরভাবে খাওয়ার উপযোগী হয়। আবার একটু সৃজনশীলতা খাটিয়ে লবণ,
মরিচ, পেয়াজ তেলে মিশিয়ে খেলে মন্দ হবে না এবং সিদ্ধ করা কিনোয়া। কিনোয়ার আটা দিয়ে
সব ধরণের খাদ্য তৈরি করা যায়।
পরিশেষে বলা যায় যে, কিনোয়া মানব
দেহের জন্য একটি সুপার এবং উপকারী খাদ্য। বাংলাদেশের এই কিনোয়া চাষের প্রচলন বেশি
না থাকলেও আমরা এর গুনাগুণ সম্পর্কে বহুল আংশিক উপকারীতা জানতে পারলাম। ভবিষ্যতে
যদি আমরা এই কিনোয়া চাষের প্রতি আরো বেশি জোরদার হই তাহলে আমাদের দেশের মানুষ
বহুলাংশে উপকৃত হবে বলে আশাবাদী।
রবিউল ইসলাম
কৃষি পরামর্শ Group
No comments:
Post a Comment
Please do not enter any spam link in the comment box.